সিলেট নগরীর শেখঘাট খুলিয়াটুলা আবাসিক এলাকার নীলিমা-১৪ নম্বর বাসা থেকে সনিয়া বেগম নামে এক কলেজছাত্রীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১টার দিকে ওই বাড়ির ৪র্থ তলা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। মরদেহের পাশ থেকে কাপড় কাটার একটি কাঁচি জব্দ করে পুলিশ।
নিহত সনিয়া সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কলাছড়া গ্রামের বিল্লাল আহমদের মেয়ে। তিনি দক্ষিণ সুরমা ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী ও সিলেটের আঞ্চলিক নাটকে অভিনয় করতেন। তিনি মা ও সৎ বাবার সঙ্গে ওই বাসায় বসবাস করতেন।
জানা যায়, সোনিয়ার সৎ পিতা সেলিম মিয়া অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ অবস্থায় সোনিয়ার মামাতো ভাই সজিব আহমদ শনিবার রাত ১২টার দিকে সোনিয়াদের বাসায় আসেন।
রবিবার সকাল ৭টার দিকে সজিবসহ সোনিয়ার পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে বসে নাশতা করেন। পরে ঘরে সোনিয়া ও তার ভাবি ফারিয়া বেগমকে রেখে পরিবারের অন্য সদস্যরা হাসপাতালে চলে যান। এসময় সোনিয়ার মামাতো ভাই সজিব ওই বাসায় ছিলেন।
তবে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হাসপাতালে থাকা সোনিয়ার মা অমিতা বেগমকে ফোন করে সজিব বাড়ি চলে যাচ্ছেন বলে বিদায় নেন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সজিবকে সন্দেহ করছেন সোনিয়ার পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে, দুপুর ১২টার দিকে সোনিয়ার সাড়াশব্দ না পেয়ে তার ভাবি সোনিয়ার কক্ষে গিয়ে বিছানার উপরে গলাকাটা অবস্থায় দেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
এসময় হাসপাতালে থাকা পরিবারের সদস্যদের খবর দেন সোনিয়ার ভাবি। তারা বাসায় ফিরে পুলিশে খবর দিলে দুপুর পৌনে ১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে। এসময় মরদেহের পাশ থেকে কাপড় কাটার একটি রক্তমাখা কাঁচি জব্দ করে পুলিশ।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখ।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দুপুরে নিহতের আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এটি একটি লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড।
মেয়েটির গলায় ধারালো কিছুর গভীর ক্ষত রয়েছে। মরদেহের পাশ থেকে কাপড় কাটার একটি কাঁচি উদ্ধার করেছি আমরা। সেটি রক্তমাখা অবস্থায় পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, ওই তরুণী টিকটকার ছিলেন বলে জানা গেছে। আমরা পুলিশ, সিআইডি, পিবিআই মিলে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেছি। তিনি বলেন- এ ঘটনায় একজনকে আমরা সন্দেহ করছি। তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করছি না। তাকে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী মাহমুদ মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান সোনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে- পুলিশের সন্দেহের তীর সোনিয়ার মামাতো ভাই সজিবের দিকে। পরিবারের সদস্যরাও তাকে সন্দেহ করছেন। পুলিশ তাকে খুঁজছে। সজিবের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার নবীনগর গ্রামে।
জেএন/পিআর