হিমেল ধর : সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্ষুদে বইপ্রেমীদের উচ্ছ্বাসে মেতে ছিলো অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গন। নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে চলছে বইমেলা। বইয়ের স্টলগুলোতে ছিলো বইপ্রেমীদের উপচে পড়া ভিড়।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিন অমর একুশে গ্রন্থমেলা ঘুরে দেখা যায়, মেলায় পাঠক বয়োজোষ্ঠ্যদের চেয়ে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় তরূণ-তরুনীদের ভিড় বেশি।
আবার বাবা-মায়ের কোলে চড়ে ও হাত ধরে হেঁটে মেলায় বই কিনতে এসেছে অনেক কোমলমতি শিশু। মেলা ঘুরে আরও দেখা যায়, মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন পুলিশ, র্যা ব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিরাপত্তাকর্মীরা।
সাংস্কৃতিক আয়োজনে মুখর বইমেলা। কবিতা আবৃত্তি, গানের আসরে জমে উঠেছে পুরো এলাকা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অরুণ রায় বলেন, বইমেলা বাঙালির প্রাণের মেলা। ভালোবাসা আর প্রাণের টানে আমরা প্রতিবছরই বইমেলায় ছুটে আসি পছন্দসই বই কিনতে। আমি মূলত হুমায়ুন স্যারের ভক্ত। তার বই-ই বেশি পড়ি। তবে নতুন লেখকদের অনেক বই এসেছে, সেগুলো দেখছি। ভালো লাগলে কিনব।
মেলায় মা মমতা বেগমের সঙ্গে মেলায় ঘুরতে এসেছেন অর্চি। মমতা বলেন, নিজের দেশ, সংস্কৃতি ও ভাষা সম্পর্কে জানার জন্য শিশুদের জন্য বইমেলার বিকল্প নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, নিজের দেশে মায়ের ভাষা সঠিক ইতিহাস জানান শিশুদের মেলায় নিয়ে আসা উচিত।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রামের বইমেলায় স্টলের সংখ্যা এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪০টি । আগেরবার ছিল ১২০টি। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মিলিয়ে ১০৮টি প্রকাশনা সংস্থা এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে। ২১ দিনব্যাপী এ বইমেলার দশম দিন আজ। বইমেলার পাশেই জিমনেশিয়াম হলে থাকছে প্রতিদিন রবীন্দ্র ও নজরুল উৎসব, ছড়া ও কবিতা পাঠের আসর এবং বসন্ত উৎসবসহ নানা আয়োজন।
বইমেলা কমিটির আহবায়ক কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ (মঞ্জু) বলেন, বন্ধের দিন শুক্র-শনিবার বেশি মানুষ আসে। মেলায় বইপ্রেমীরা ভিড় করছেন। আমরা আশাবাদি, মেলায় বইপ্রেমীদের ভিড় শেষ দিন পর্যন্ত থাকবে। বিকিকিনিও ভাল হচ্ছে। বইমেলা শুরুর পর পাঁচ দিনে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮০ টাকার বই বিক্রি হয়েছে ১০৮ প্রকাশনার স্টলে।
প্রসঙ্গত, মেলায় পাওয়া যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ওপর লিখা উপন্যাস, গল্প, বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্য, চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ছোটদের গল্প ও কবিতার বই, বড়দের জন্য রয়েছে কবিতার বই, গল্প, উপন্যাস। মেলায় অনিন্দ্য প্রকাশনী, প্রথমা, বাতিঘর, সাহিত্য বিচিত্রা, চন্দ্রবিন্দু, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব, ইউপিএল সহ বিভিন্ন বুথের পাশাপাশি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, মঞ্চ ও সেলফি কর্নার রয়েছে। মেলা পরিষদের কক্ষ, সুপরিসর মিডিয়া সেন্টার, হেলথ কর্নার, ফায়ার সার্ভিস, অভ্যর্থনা কক্ষ, টিভি বুথ, এটিএম ব্যাংকের বুথ, সার্বক্ষণিক সেবা ব্যবস্থাপনার জন্য সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের সার্ভিস বুথ রয়েছে।
জেএন/হিমেল/এমআর