সরকারি হাসপাতালে ‘প্রাইভেট চেম্বার’-সর্বোচ্চ ফি ৩শ টাকা

সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবায় কিছুটা স্বস্তি দিতে সরকারি হাসপাতালেই এবার চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের ব্যবস্থা করছে সরকার।

- Advertisement -

আগামী ১ মার্চ থেকে সরকারি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণের অফিস সময়ের বাইরে স্ব স্ব হাসপাতালের চেম্বারে রোগী দেখবেন। চিকিৎসক প্রত্যেক রোগীর কাছ থেকে সর্বোচ্চ ফি ৩শ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা নিবেন।

- Advertisement -google news follower

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত এ সংক্রান্ত কমিটির নীতিমালায় এসব প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রাইভেট চেম্বার চালুর বিষয়ে গত ২২ জানুয়ারি একটি কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।

মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাইদুর রহমানকে কমিটির প্রধান করা হয়। প্রথমে ২০ জনকে কমিটির সদস্য করা হয়। পরে আরও ৬ জনকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

- Advertisement -islamibank

কমিটির প্রধান সাইদুর রহমান বলেন, আগামী ১ মার্চ থেকে সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট প্র্যাকটিস চালু হবে। রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতেই সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সরকারি হাসপাতালে সকাল ৮ থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রোগী দেখেন চিকিৎসকরা। এ সময়টাতে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে রোগীদের দীর্ঘ লাইন থাকে। এরপরও অনেকে চিকিৎসকের দেখা পান না।

এসব ঝামেলার কারণে বিত্তবানরা বেসরকারি হাসপাতালকে বেছে নেন। সমস্যা হয় সাধারণ মানুষের। তাই সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবায় কিছুটা স্বস্তি দিতে সরকারি হাসপাতালেই এবার চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের ব্যবস্থা করছে সরকার।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, চেম্বারের সময় বেলা ৩ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়। জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকের ফি ৩শ টাকা। কনিষ্ঠ চিকিৎসকের ফি দেড়শ টাকা।

৩শ টাকা ফি থেকে জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক পাবেন ২শ টাকা। তার সহায়তাকারী পাবে ৫০ টাকা এবং বাকি ৫০ টাকা সরকারি তহবিলে জমা হবে। দেড়শ টাকা ফি থেকে কনিষ্ঠ চিকিৎসক পাবেন ১শ টাকা, চিকিৎসকের সহায়তাকারী পাবেন ২৫ টাকা। বাকি ২৫ টাকা জমা হবে সরকারি তহবিলে।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র আরও জানায়, ১ মার্চ উপজেলা পর্যায়ে ৫০টি, জেলা পর্যায়ে ২০টি, বিভাগীয় পর্যায়ে ৮টি ও বিশেষায়িত ৫টি সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট চেম্বার চালু হবে।

উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল ঠিক করা হয়েছে রোগীর উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে। যেসব হাসপাতালে রোগী বেশি আসে, সেখানে এ সেবা চালু করা হবে। আগামী আগস্টের মধ্যে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট চেম্বার চালুর পরিকল্পনা করছে মন্ত্রণালয়।

প্রাইভেট চেম্বারে কনসালটেশন, ডায়াগনস্টিক, ল্যাবরেটরি, রেডিওলজি, ইমেজিং ও সার্জিক্যাল সেবা দেয়া হবে। চিকিৎসকেরা পালা করে রোগী দেখবেন।

একজন অধ্যাপক সপ্তাহে দুই দিন, সহযোগী অধ্যাপক দুই দিন, সহকারী অধ্যাপক দুই দিন রোগী দেখবেন। চিকিৎসক যদি রোগীকে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেন, রোগী চাইলে তা সরকারি হাসপাতালে করতে পারবেন। আবার বেসরকারি হাসপাতালেও করতে পারবেন।

এবিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, নিজ হাসপাতালে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রাইভেট প্র্যাকটিসের পর কোনো চিকিৎসক যদি অন্য কোথাও গিয়ে রোগী দেখেন, সেটি তার নিজস্ব বিষয়। চিকিৎসক চাইলে তা করতে পারবেন।

এবিষয়ে কমিটির সদস্য ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, আমাদের কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই শুরুতে সীমিত আকারে হয়তো শুরু করবো। পর্যায়ক্রমে এর পরিধি বাড়ানো হবে।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) যখন এই সেবা চালু হয় তখন সবারই ব্যাপক আগ্রহ ছিলো। এর পর সিনিয়র অধ্যাপকরা জুনিয়র মেডিকেল অফিসারদের বসিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত চেম্বারে চলে যান।

এটার তদারকিতে আর কেউ থাকেন না। বিএসএমএমইউতে যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে সরকারি হাসপাতালগুলোর চিত্র কেমন হবে? তবে সরকার কঠোর হলে সবই সম্ভব।

এবিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, শূন্য পদগুলোতে নিয়োগ দান, চিকিৎসকদের বিকেলে রোগী দেখার জন্য রোস্টার তৈরির পাশাপাশি তাদের ব্যক্তিগত চেম্বার করারও সুযোগ দিতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বৈকালিক চেম্বারকে মডেল হিসেবে ধরে ধাপে ধাপে এটি চালু করলে ভালো হবে।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM