কর্ণফুলীতে বিনি সুতার মালা

কর্ণফুলী রক্ষায় দেশের বৃহত্তম সামাজিক আন্দোলন তিনব্যাপী সাম্পান খেলা ও চাটগাঁইয়া সাংস্কৃতিক মেলার অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিন “বিনি সুতার মালা” এর অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।

- Advertisement -

কর্ণফুলী নদীতে ভাসমান মা আয়োজিত অনুষ্ঠান এক ঘাট থেকে অন্যঘাটে ঘুরে ঘুরে কর্ণফুলী দখল দুষণমুক্ত করার গুরুত্ব সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য নদী ব্যবহারকারীদের মধ্যে উপস্থাপনের পাশাপাশি আলিক গান ও পাহাড়ি নৃত্যের আয়োজন করা হয়।

- Advertisement -google news follower

বিনি সুতার মালার ভাসমান ম কর্ণফুলী নদী সদরঘাট চরপাথরঘাটা সাম্পান ঘাট, গাইজ্জার ঘাট, তোতার বাপের হাট, কালুরঘাট বোয়ালখালী হয়ে নগরীর ব্রিজ ঘাট অভয়মিত্র ঘাট ও বাংলাবাজার এসে সমাপ্ত হয়।

তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন আগামীকাল ২ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার ব্রিজ ঘাট থেকে শুরু হবে সাম্পান শোভাযাত্রা (র‍্যালী। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়।

- Advertisement -islamibank

সাম্পান শোভাযাত্রায় পাঁচটি সাম্পান মাঝি সমিতির ৩ শতাধিক সাম্পান অংশ গ্রহন করবে।

আজ ১ মার্চ বুধবার সকাল নয়টায় নগরীর সদরঘাট থেকে বিনি সুতার মালা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সাম্পান সাম্পান খেলা ও চাঁটগাইয়া সাংস্কৃতিক মেলা ১৪২৯ বাংলার প্রধান সমন্বয়ক শাহেদুর রহমান শাহেদ। উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী ফরিদের সভাপতিত্বেও উদযাপন পরিষদের সমন্বয়ক এস এম পেয়ার আলীর সঞ্চলনায় উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, ডায়মন্ড সিমেন্টের পরিচালক আলহাজ্ব হায়দার আলী। প্রধান বক্তা ছিলেন, কর্ণফুলী গবেষক প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী, বিশেষ অতিথি ছিলেন, চরপাথরঘাটার সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক মেম্বার। তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদযাপন ও কর্ণফুলী নদী দখল দূষণমুক্ত করার গুরুত্ব সম্পর্কে প্রবন্ধ উপস্থাপন করে চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ্ব হায়দার আলী বলেন, কর্ণফুলী রক্ষায় সংস্কৃতির সুদৃঢ় বন্ধন বিনি সুতার মালা। এক ঘাট থেকে আরেক ঘাটে ঘুরে ঘুরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার এই নান্দনিক আয়োজন সাম্পান মাঝিদের সার্বিক সহযোগিতার কারনে তা সম্ভব হচ্ছে। তিনি বলেন, সাম্পান ঘাট ঘাটে সাম্পান মাঝি না থাকলে আমাদের সাম্পান চট্টগ্রামের ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে। যা কিছুতেই হতে দেয়া যাবে না। তিনি ব্যবসায়ী ও নদী ব্যবহারকারী চট্টগ্রাম বন্দরকে নদীর সীমানায় না আসার আহবান জানিয়ে বলেন, জীবন্ত ও সুস্থ রাখতে হলে কর্ণফুলীকে নিজস্ব ধারায় প্রবাহমান রাখতে হবে। এর কোন বিকল্প নাই।

প্রধান বক্তা হিসাবে প্রফেসর ড.ইদ্রিস আলী বলেন, সম্প্রতি সাম্পান মাঝি পেশাদার পাটনিজীবীদের বিভক্ত করে ফায়দা লুট করার চেষ্টা ও কর্ণফুলী থেকে সাম্পান বিলুপ্ত করার পাতারা করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। যা কিছুতেই হতে যাবেনা।

সামাজিক আন্দোলন না থাকলে এতোদিনে কর্ণফুলীর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যেত। সাম্পান মাঝি ও সামাজিক সংগঠনের আন্দোলন সত্ত্ওে কর্ণফুলীর দেহ খুড়ে খুঁড়ে খাওয়া হচ্ছে। এটা আমাদের বন্ধ করতেই হবে। চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান বলেন, কর্ণফুলী চট্টগ্রাম ও দেশের আড়াই হাজার বছরের ইতিহাস সংস্কৃতি ধারণ করছে। যে সংস্কৃতি সাম্পানের, গানের, ১২টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির। তিনি দেশের সংস্কৃতি ও অর্থনীতির স্বার্থে কর্ণফুলীকে রক্ষা করার আহবান জানান।

সনজিত আচার্য্যের পরিচালনায় বিনি সুতার মালায় আ লিক গান পরিবেশন করেন শিল্পী গীতা আচার্য্য ও শীলা চৌধুরী। পলিয়ন মোবাং এর পরিচালনায় মারমা ত্রিপুরা নৃত্য পরিবেশন করেন শ্রীদেবী ত্রিপুরা, মেমাসিং মারমা।

অনুষ্ঠানে অন্যান্য মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি জাফর আহমদ, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান দয়াল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ লেদু মিঞা, জেবল হোসেন, আলী নূর, সহ কোষাধ্যক্ষ ফরিদ আহমদ প্রমুখ।
জেএন/এফও/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM