চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় একটি অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬ জনে দাড়িয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে, এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
শনিবার (৪ মার্চ) বিকেলে সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুলপুর এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অন্তত ৩৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৬ জনকে আনা হয়।
ঘটনাস্থলে থাকা সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম জানান, এ পর্যন্ত এ ঘটনায় ছয়জন মারা গেছেন বলে তথ্য পেয়েছি। বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর ওই অক্সিজেন প্ল্যান্টের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ঘটনাস্থলে রয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
শনিবার সন্ধ্যায় চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশেক জানিয়েছেন, সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৬ জনকে চমেক হাসপাতালে আনা হয়েছে।
এরমধ্যে ৬ জনকে মৃত ঘোষণা করেছে চিকিৎসক। তাদের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আনা হয়েছে। নিহত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনের নাম জানা গেলেও বাকি একজনের পরিচয় মেলেনি।
নিহতরা হলেন, মো. শামসুল আলম (৫৬), মো. ফরিদ (৩৬), রতন লখরেট (৪৫), আব্দুল কাদের (৫০) ও সালাউদ্দিন।
তাছাড়া আরো ২০ জনকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহতরা হলেন, মো. ফোরকান (৩৩), মো. নুর হোসেন (৩০), আ. মোতালেব (৫২), মো. আরাফাত (২২), মাকসুদুল আলম (৬০), মো. ওসমান (৪৫), মো. সোলায়মান (৪০), মো. রিপন (৪০), মো. আজাদ (২২), রিপন (৬০), নারায়ন ধর (৬৪), মো. জসিম (৫০), ফেন্সী (২৬), মো. জাহেদ (৩০), মুবিবুল হক (৪৫), রোজি বেগম (২০) এবং মাহিন শাহরিয়ার (২৬)। দুজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
এর আগে চট্টগ্রামের কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার সুলতান মাহমুদ জানান, শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আগুন লাগার সংবাদে ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। উদ্ধার অভিযানে যোগ দেন নৌবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা। তারা ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এতে বহুলোক দগ্ধ হয়। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। হতাহতদের অনেকের হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
এরআগে বিকেল ৪টার দিকে সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের সঙ্গে নৌবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনো উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে সীমা রি-রোলিং মিলের অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসানকে প্রধান করে গঠিত কমিটটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে বিস্ফোরণের কারণ জানাতে বলা হয়েছে। শনিবার (৪ মার্চ) রাতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জেএন/পিআর