তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পঞ্চগড়ের ঘটনা সারাদেশে বিএনপির বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারার অংশ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি এবং তাদের মিত্ররা পুরো দেশে নানাভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারার মধ্যে আছে। সাম্প্রদায়িক যে উগ্র গোষ্ঠীকে নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করে, তারা নানা ধরণের ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে। পঞ্চগড়ের ঘটনাও বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়।’
মন্ত্রী আজ দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘দেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে তো বিএনপি। পঞ্চগড়ে যে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে, সেখানে যারা কাদিয়ানিদের জলসাতে হামলা চালিয়েছে তারা কারা সেটা তো পুলিশের খাতায় আছে। তাদের বেশির ভাগই ছিল বিএনপির সমর্থক। তারাই সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, হামলা চালিয়েছে এবং সে হামলায় দু’জন মৃত্যুবরণ করেছে। মির্জা ফখরুল সাহেব নিজেদের দায়টা এড়ানোর জন্য দুইদিন পরে রোববার বক্তব্য রেখেছেন। আসলে এ ঘটনার জন্য বিএনপি-জামাতের সমর্থকরাই মূলত দায়ী।’
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলযোগ, সীতাকুন্ডে ও ঢাকার সায়েন্সল্যাবে বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব সরকারকে দায়ী করেছেন -এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে আমাদের সরকার। তাদের চিকিৎসা, খাদ্য, শিক্ষা সবকিছুই আমাদের সরকার ব্যবস্থা করছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঘটনাটি তদন্তাধীন, এটি নাশকতা কি না এবং এটি সার্বিকভাবে দেশের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টার অংশ কি না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘সায়েন্সল্যাব এবং সীতাকুন্ডের ঘটনাগুলো দুর্ঘটনা। মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্যে মনে হচ্ছে- কারো চুলায় আগুন লাগল, আর ক’দিন পরে বলল যে এ জন্য সরকার দায়ি। বিষয়টা তো তা নয়, এটা দুর্ঘটনা। তবে এই দুর্ঘটনা অবশ্যই অনভিপ্রেত, দু:খজনক। এই দুর্ঘটনার জন্য যারা দায়ি তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বদ্ধপরিকর।’
ফটোজার্নালিস্টস এসোসিয়েশনের সঙ্গে তথ্যমন্ত্রী: এর আগে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্টস এসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় করেন মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এ সময় তিনি বলেন, গণমাধ্যমে ফটোজার্নালিজম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক। পৃথিবীতে বহু কালজয়ী বিখ্যাত ফটোজার্নালিস্ট আছে। আমাদের দেশেও মুক্তিযুদ্ধের যে ছবিগুলো এখন আমরা দেখতে পাই সেগুলো ফটোজার্নালিস্টদেরই তোলা। ভারত-বিভাগের সময় যে আন্দোলন-সংগ্রামের ছবি সেগুলোও ফটোজার্নালিস্টদের তোলা। ফটোজার্নালিস্টরা সমসাময়িক কালকে ধারণ করে, ইতিহাসকে ধারণ করে। এমন ছবি আছে যেগুলো পৃথিবীকে ভাবায়, মানুষের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ফটোজার্নালিস্টদের তোলা বহু ছবি ইতিহাস ও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং আমাদের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছে। সিরিয়ার উপকূলে শরণার্থী একটা ছেলের লাশের ছবি সমগ্র পৃথিবীকে ভাবিয়ে তুলেছে। যখন কোনো দৈব-দুর্বিপাক হয় তখন ফটোজার্নালিস্টরা সেখানে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছবি তোলে, অনেক সময় একটা ছবির জন্য অনেকক্ষণ, অনেক দিন, অনেক মাস অপেক্ষা করতে হয়, এমন ঘটনাও আছে। ফটোজার্নালিস্টদের কাজটি অত্যন্ত সূক্ষ্ম কাজ।
ফটোজার্নালিস্টস এসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত সভাপতি শ্রী ইন্দ্রজিৎ কুমার ঘোষ, সহ-সভাপতি নাসিম সিকদার ও জাহিদ উদ্দিন আহাম্মেদ সাইমন, সাধারণ সম্পাদক কাজী বোরহান উদ্দিন, যুগ্ম-সম্পাদক বাবুল তালুকদার ও দেলোয়ার হোসেন বাদল, অর্থ সম্পাদক আব্দুল আজিজ ফারুকী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোববারক হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মমীন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এম খোকন সিকদার, দপ্তর সম্পাদক মো: রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য আল আমিন লিয়ন, মো: মহুবার রহমান, মশিউর রহমান সুমন ও এস এ মাসুম মতবিনিময়ে অংশ নেন।
জেএন/এমআর