প্রায় অর্ধশতাধিক নারীদের নামে ফেইক ফেসবুক আইডি করে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড থানার তত্বাতার পুল এলাকার আবু শুক্কুরের ছেলে আল মাসুম (৩০)। সে ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জারে ভিকটিমদের নগ্ন ছবি পাঠানোসহ তাদের নগ্ন অবস্থায় তার সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে বাধ্য করার জন্য ভীতি প্রদর্শক মেসেজ পাঠাত।
অবশেষে কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের সাইবার ইউনিট অভিযান চালিয়ে আজ বৃহস্পতিবার তাকে ইপিজেড এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে এ অপরাধে ব্যবহৃত ৩ টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট জানায়, সাম্প্রতিককালে চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন থানা এলাকার নারী ভিকটিমরা কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের সাইবার ইউনিটে অভিযোগ করেন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাদের অনুমতি ছাড়া তাদের পরিচিতি তথ্য, ছবি সংগ্রহ ও ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুকে ফেইক আইডি খুলে অশ্লীল, আপত্তিকর ক্যাপশন দিতে পোস্ট দিত। ভিকটিমদের ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি এবং তাদের ফ্রেন্ডলিস্টের অন্যান্য সদস্যদের মেসেঞ্জারে অশালীন মেসেজ দিত। সে ভিকটিমদের অশালীন ছবি এবং নগ্ন ভিডিও প্রদান করার কুপ্রস্তাব দিয়ে মানসিকভাবে হেনস্তা করে আসছিল।
ভিকটিমরা সংশ্লিষ্ট থানাসমূহে সাধারণ ডায়েরি করার পাশাপাশি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন পেইজে অভিযোগ করে।
অনুসন্ধানকালে, পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন সেল এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় অভিযুক্তকে সনাক্ত করে। পরে কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের সাইবার ইউনিটের একটি টিম সিএমপির ইপিজেড
থানাধীন দক্ষিণ হালিশহরস্থ নিউমুরিং তক্তারপুল এলাকা হতে অভিযুক্ত আল মাসুমকে (৩০) গ্রেফতার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, গত ৭-৮ মাস ধরে বিভিন্ন সময়ে ডিজিটাল ডিভাইস তথা তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নারী ভিকটিমদের অনুমতি ছাড়া তাদের পরিচিতি তথ্য, ছবি সংগ্রহ ও ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিকটিমদের ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে ফেইক আইডি খুলে ভিকটিমের ছবি ব্যবহার করে অশ্লীল ও আপত্তিকর ক্যাপশন দিয়ে পোস্ট করে।
ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জারে ভিকটিমদের নগ্ন ছবি প্রেরণসহ ভিকটিমদেরকে নগ্ন অবস্থায় তার সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে বাধ্য করার জন্য ভীতি প্রদর্শক মেসেজ প্রেরণ করে মর্মে স্বীকার করে।
অভিযুক্তের টার্গেট বিভিন্ন স্কুল কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রীরা। দীর্ঘদিন যাবত তার এ অপকর্মে ফেসবুক ব্যবহারকারী অন্তত অর্ধশতাধিক ছাত্রী মারাত্মকভাবে সামাজিকভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে ইপিজেড থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জেএন/এফও/এমআর