আগামী ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও-পাঁচলাইশ একাংশ) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ২৭ জন। এর মধ্যে প্রয়াত দুই সংসদ সদস্যের স্ত্রী, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা, ব্যবসায়ী, প্রবাসী-পেশাজীবীরাও রয়েছেন। প্রার্থী চূড়ান্ত করতে আগামীকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একাদশ সংসদের মেয়াদ আছে আর মাত্র ৯ মাস। ইতিমধ্যে দ্বিতীয় দফায় শূন্য হয়েছে চট্টগ্রাম-৮ নির্বাচনি আসনটি। তৃতীয় দফায় যিনি নির্বাচিত হবেন, তিনি সর্বোচ্চ ছয় থেকে আট মাসের মতো মেয়াদ পাবেন। এই স্বল্প সময়ের জনপ্রতিনিধি হতেও আগ্রহের কমতি নেই আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে, যাদের অধিকাংশেরই খুব বেশি পরিচিতি নেই এলাকায়। তবে অনেকের মধ্যে আলোচনা রয়েছে যে, মেয়াদের শেষ কয়েক মাসের জন্য যিনি এমপি হবেন, তিনিই অনায়াসে পরবর্তী সংসদ নির্বাচনের বৈতরণীও পার হবেন। বিদ্যমান ভোটের পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের টিকিট যিনি পাবেন, তিনিই যাবেন সংসদে।
চট্টগ্রাম-৮ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৮৫। এর মধ্যে ২ লাখ ৪১ হাজার ১৯৮ পুরুষ এবং ২ লাখ ৩৩ হাজার ২৮৭ নারী। ২০০৮ সাল থেকে পরপর তিন দফায় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতা মঈনউদ্দিন খান বাদল। ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর তিনি মারা গেলে চলতি মেয়াদের প্রথম দফায় আসনটি শূন্য হয়। ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ। তিনি গত ৫ ফেব্রুয়ারি মারা গেছেন।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, এই আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ মার্চ। মনোনয়নপত্র বাছাই ২৯ মার্চ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ৫ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ৬ এপ্রিল। গত ২০ মার্চ থেকে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র বিতরণ শুরু হয়। ২২ মার্চ শেষ দিন পর্যন্ত ২৭ জন মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন।
মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন—আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সদস্য সাইফুল ইসলাম, এস এম কফিল উদ্দীন, মো. হায়দার আলী চৌধুরী, মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ও মো. আরশেদুল আলম বাচ্চু, বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, উপদেষ্টা মোহাম্মদ জাহেদুল হক ও সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ মনছুর আলম, নগর কমিটির কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, সদস্য বিজয় কুমার চৌধুরী, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক আবু তাহের, জাতীয় শ্রমিক লীগ চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এস এম নুরুল ইসলাম, নগরীর মোহরা সাংগঠনিক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশেক রসুল খান ও সুকুমার চৌধুরী, পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের সদস্য মো. এমরান, বায়েজিদ বোস্তামি থানা কমিটির সদস্য কফিল উদ্দিন খান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ রবি, সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল কাদের, সাবেক সহসভাপতি এস এম আবুল কালাম, দক্ষিণ জেলা তাঁতী লীগের সহসভাপতি জহুর চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন, স্বাধীনতা চিকিত্সক পরিষদের সদস্য আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক উপ দপ্তর সম্পাদক মো. মাহাবুব রহমান, নগর কমিটির সাবেক সহসভাপতি এ টি এম আলী রিয়াজ খান, সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শিরিন আহমেদ, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মঈনউদ্দিন খান বাদলের স্ত্রী চান্দগাঁও ওয়ার্ডের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিনা খান।
শুরু থেকেই আ জ ম নাছির উদ্দীনের নাম জোরেশোরে আলোচিত হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করেননি। বিজয় কুমার চৌধুরী ও নোমান আল মাহমুদ তার অনুসারী হিসেবে পরিচিত। পেশায় প্রকৌশলী বিজয় কুমার চৌধুরী ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৫ সালে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও তিনি হেরে যান।
জেএন/এমআর