ক্রিকেট, বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড ও মাঠের বাইরের বিতর্ক। গত কয়েক দিন দুবাই-ঢাকা-সিলেট মিলিয়ে এসব ইস্যুতেই আলোচিত ছিলেন সাকিব আল হাসান। তার মাঠের পারফর্ম নিয়ে কোনো কথা না থাকলেও দুবাইয়ের শোরুম উদ্বোধন নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তবে এসবের বাইরেও মানবিক এক সাকিব রয়েছেন।
কিছুদিন আগেই মাস্তুল ফাউন্ডেশনকে একটি অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিয়েছেন তিনি। আর এখন নিজের ৩৬তম জন্মদিনে মহতী এক উদ্যোগে সাড়া ফেলেছেন। বিশেষ দিনটিতে বাঁহাতি ক্রিকেটার নিজের নামে ক্যান্সার ফাউন্ডেশন উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন।
তবে সাকিবের স্বপ্ন আরও বড়। বাংলাদেশেই বিশ্বমানের ক্যান্সার হাসপাতাল গড়তে চান জাতীয় দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। রাজধানীর এক পাঁচ তারকা হোটেলে নিজের নামে ক্যান্সার ফাউন্ডেশন যাত্রার দিনে সাকিব বলেন, ‘রোজার শুরু, জুম্মার দিন, আজ আর আমার জন্মদিন। এক দিনে সব মিলে গেছে তাই দিনটি আমার জন্য আলাদা। আলাদা আরও একটি কারণে, আমাদের এই নতুন উদ্যোগের কারণে। আমি অনেক সময় অনেক কিছুর সঙ্গে জড়িয়েছি। চেষ্টা করেছি মানুষের পাশে থাকার। এবার প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কিছু করতে চাই। এই ক্যান্সার ফাউন্ডেশন করার পেছনে সত্যিকার অর্থে সেটিই কারণ।’
ফাউন্ডেশন দিয়ে সাকিবের স্বপ্ন এখন বড় একটা হাসপাতাল তৈরি। যাতে সুবিধা বঞ্চিত মানুষেরা তার সেবা নিতে পারেন, ‘সাকিব আল হাসান ক্যান্সার ফাউন্ডেশন কাজ করতে চায় সেসব মানুষের জন্য, যাদের ব্যয়বহুল এই চিকিৎসা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। আমরা যদি ১০০ বা এক হাজার মানুষকে সহায়তা করতে পারি সেটাই অনেক বড় অর্জন হবে। আমাদের স্বপ্ন বড় একটা ক্যান্সার হাসপাতাল করার। যেখানে পরিপূর্ণ আধুনিক চিকিৎসার সকল কিছু থাকবে।’
সাকিবের মহতী উদ্যোগে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও। তিনি সাকিবের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘আজকে সাকিবের জন্মদিন, আমি জানতাম না। এটা একটা বড় দিন। আমার জানা উচিত ছিল, কিন্তু জানতাম না। এমন একটা দিনে এ ধরনের একটা প্রোগ্রাম, সত্যিই এর চেয়ে ভালো দিন আর হতে পারে না।’
সাকিবের এই মহতী উদ্যোগের সঙ্গে রয়েছেন বিকেএসপির সাবেক কয়েকজন ক্রিকেটার ও দু’জন কোচ। অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক কাফি খানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ৯ জনের একটি গ্রুপ মিলে ফাউন্ডেশনটি গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এক বছর আগে সাকিব আল হাসান ক্যান্সার ফাউন্ডেশনের নিবন্ধনও করা হয়েছে বলে জানান গ্রুপের অন্যতম সদস্য জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার নাঈম ইসলাম। অন্য সদস্যরা হলেন– জাতীয় দলের সাবেক বাঁহাতি স্পিনার ও বর্তমান নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় দলের সাবেক বাঁহাতি স্পিনার সোহরাওয়ার্দী শুভ, ক্রিকেটার মো. নাসিরুল ইসলাম ও প্রায়ত মোশাররফ হোসেন রুবেল, যিনি মস্তিষ্কের ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে গত বছর ১৯ এপ্রিল মারা গেছেন। বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও জাতীয় দলের সাবেক কোচ সারওয়ার ইমরান এই ফাউন্ডেশনের দু’জন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
জেএন/এমআর