জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) দুটি বড় প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
একনেকের সভায় নগরের বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন খাল খনন প্রকল্প এবং চান্দগাঁও এলাকায় সর্বাধুনিক কসাইখানা (স্লটার হাউজ) নির্মাণের জন্য ৮০ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নের জন্য ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বুধবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসিতে একনেকের সভায় এ প্রকল্প দুটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
একনেকের সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সামসুদ্দোহাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প দুটির বাস্তবায়নের অনুমোদন দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। বর্তমান সরকার আবার নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামের উন্নয়নের স্বার্থে আরো বড় প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রকল্পের কার্যক্রম তুলে ধরে সিটি মেয়র জানান, প্রকল্পটির আওতায় নতুন খাল খনন হলে নগরের পানির ধারণ ক্ষমতা বাড়বে। এছাড়া শুরু থেকেই খালটি পরিচর্যা করা গেলে নগরবাসী খুব কম সময়ের মধ্যে সুফল পাবেন। খালটির দুই পাশে রাস্তাও নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নগরের বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন হবে এবং নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টি হওয়ার ফলে জনগণের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হবে।
চসিক সূত্রে জানা যায়, নগরের বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খননে চসিকের আলোচিত প্রকল্পটি ২০১৪ সালের ২৪ জুন একনেকে অনুমোদন পেয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ এবং অর্থ ছাড় না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ শুরু করা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকার প্রকল্পটি সংশোধিত আকারে একনেকের সভায় উপস্থাপন করা হয়।
প্রকল্পের ডিপিপি সূত্রে জানা গেছে, নতুন খালটি নগরের বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়াস্থ চাক্তাই খাল থেকে শুরু হয়ে শাহ আমানত সেতু সড়ক হয়ে নুর নগর হাউজিং সোসাইটির মাইজপাড়া দিয়ে পূর্ব বাকলিয়া হয়ে বলির হাটের পাশে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়বে। খালটির দৈর্ঘ্য হবে আনুমানিক ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার এবং প্রশস্ত হবে ৬৫ ফুট। খালটির মাটি উত্তোলন, সংস্কার ও নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে খালের উভয় পাশে ২০ ফুট করে ২টি রাস্তা নির্মাণ করা হবে।
অন্যদিকে নগরে ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে পরিবেশবান্ধব সর্বাধুনিক কসাইখানা (স্লটার হাউজ) নির্মাণ প্রকল্পটিও একনেকে অনুমোদন পেয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আধুনিক কসাইখানা নির্মাণের জায়গা চেয়ে চসিক বরাবরে চিঠি পাঠানো হয়। তারই প্রেক্ষিতে চসিকের পক্ষ থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য জায়গা দিতে আগ্রহের কথা জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয় প্রকল্প পরিচালককে। যার ধারাবাহিকতায় আধুনিক এ “স্লটার হাউজ”নির্মাণে ৮৮ শতক জায়গা প্রদান করবে চসিক।
নগরের চান্দগাঁও পুরাতন থানা এলাকায় এ আধুনিক কসাইখানাটি নির্মিত হবে। এতে থাকবে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, আইসোলেশন, স্মার্ট স্টকিং স্পেস সুবিধা, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, আধুনিক রক্ত ও বর্জ্য অপসারণ ব্যবস্থা। এছাড়া এ প্রকল্পের আওতায় থাকবে ৫ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন ও জবাই এলাকা যেখানে একদিনেই জবাই করা যাবে ১শ পশু। অপেক্ষায় রাখা যাবে ৩শ পশু। পশুর নাড়িভুঁড়িসহ শিং যেগুলো ফেলে দেয়া হয়, এ প্রকল্প হলে সেগুলোও বিদেশে রপ্তানি করা যাবে।
“স্লটার হাউজ”নির্মাণ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, “স্লটার হাউজ”পশু জবাই ব্যবস্থাপনায় একটি পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ। এর মাধ্যমে নগরবাসী মানসম্পন্ন হালাল মাংস পাবে।
জয়নিউজ/জুলফিকার