প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভূমিসংক্রান্ত জটিলতা নিরসন এবং সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারী আরও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবেন, সেটাই আশা করি। আওয়ামী লীগ জনগণের সেবক। জন্মলগ্ন থেকেই এদেশে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের কল্যাণ সাধনই আমাদের লক্ষ্য।
আজ বুধবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় ভূমি সম্মেলন-২০২৩ ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাতটি প্রকল্পের উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভূমি-সংক্রান্ত সেবা নিতে গিয়ে অনেক মানুষকে অনেক হয়রানি হতে হয়েছে। আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলছি, তাতে আর সেই হয়রানিটা মানুষকে পেতে হবে না। দেশে থাকেন, প্রবাসে থাকেন; আপনার সম্পদ আপনারই থাকবে। আপনার অধিকার যেভাবে সুনিশ্চিত হয় সেই ব্যবস্থাটাই আমরা নিয়েছি। আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের অনিয়ম দূর হোক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ওরা ধ্বংস করে। আওয়ামী লীগ সৃষ্টি করে।
প্রতিটি উপজেলায় উন্নত ভূমি অফিস ও রেকর্ড সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা আমাদের ছয়টি ভূমি অফিসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। রেকর্ড পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে ভূমি অফিসের দুরবস্থা সবার নজরে এসেছে। এতে আমরা ৪০০টি আধুনিক ভূমি অফিস করে দিয়েছি। এক দিক থেকে ভালো হয়েছে, ওদের আগুন লাগানোর ফলে নতুন ও আধুনিক ভূমি অফিসের ব্যবস্থা হয়েছে। আর এও প্রমাণ হয়েছে- ওরা ধ্বংস করে। আওয়ামী লীগ সৃষ্টি করে মানুষের কল্যাণে। মানুষের সেবা করে যাওয়াটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের অনিয়ম দূর হোক। আমরা আজ সাতটি উদ্যোগ উদ্বোধন করলাম। এর ফলে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন সহজ হবে।
সম্পদ বণ্টন নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা দেখি, বোনকে বঞ্চিত করে ভাই। আবার বোনও ভাইকে বঞ্চিত করে। বোনও বোনকে বঞ্চিত করে এমন ঘটনাও আছে। বণ্টন ব্যবস্থাটা ডিজিটালাইজড করলে এই সমস্যা হবে না। অধিকাংশ পারিবারিক সমস্যা এই বণ্টনের কারণে হয়। খুন-খারাবিও হয়। এরমধ্য দিয়ে অনেক পারিবারিক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। মানুষ শান্তি পাবে। মানুষের জীবনের শান্তি ও সমৃদ্ধি আমাদের কামনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ অনলাইনে আদায় করা হবে। দেশের সাধারণ জনগণের পাশাপাশি ১৯২টি দেশ থেকে কল সেন্টারে বা ভূমি সেবা পোর্টালে আবেদন করলে প্রবাসীদের ঠিকানায়ও প্রেরণ করা হবে খতিয়ান। এরই মধ্যে অনলাইনে ৭৭০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। দিনে গড়ে রাজস্ব আদায় পাঁচ কোটি টাকার বেশি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, ১৬১২২ ফোন করে কিংবা ঘরে বসে Land.govt.bd এই পোর্টাল থেকে নামজারি, খতিয়ান নেওয়া এবং ভূমি কর দেওয়া যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশনের পাশাপাশি ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। ভূমি-সংক্রান্ত অপরাধ ঠেকাতেও নেওয়া হয়েছে ব্যবস্থা। ভূমিতে নতুন নিয়োগ বিধিমালার মাধ্যমে নিয়োগের সমস্যারও সমাধান করা হয়েছে। সামনে আর জনবল সংকট থাকবে না। সব উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের যানবাহনও দেওয়া হয়েছে।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মকবুল হোসেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
জেএন/এমআর