আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সাংবাদিকদের সুখে-দুঃখে আমরা আছি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় আমরাও বিশ্বাসী।
এ স্বাধীনতা আমরা ক্ষুণ্ন করতে চাই না। কিন্তু সাংবাদিককেও দায়িত্বশীল হতে হবে। স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে কারো উদ্ধৃতি স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশ করা, এটা কি দেশের প্রতি ভালোবাসার সামান্যতম নিদর্শন? এটা দেশকে কটাক্ষ করার শামিল।
স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা আর আমার এই মাতৃভূমি বাংলাদেশকে কটাক্ষ করা দুটোই এক এবং সেটাই তারা করেছে।
আজ রোববার (২ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন ও প্রবন্ধ রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য আমরাই লড়াই করেছি। শামসুর রহমান, মানিক শাহ, হুমায়ুন কবির বালুসহ অসংখ্য সাংবাদিক যারা হত্যা করেছে, তারা আজ সাংবাদিকদের স্বাধীনতার জন্য মায়া কান্না করে।
এ দেশে অসংখ্য সাংবাদিকের হত্যার হোতা হচ্ছে তারা। সংবাদপত্রের অষ্টম ওয়েজ বোর্ডসহ সাংবাদিক কল্যাণের জন্য যা কিছু করা হয়েছে সবকিছু, আমি বলব, নির্দ্বিধায় বলব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করেছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শিশুর হাতে আপনি ১০ টাকা ঘুষ দিয়ে এ ধরনের কথা? পরে বললেন ভুল। ভুল হলে ভুলের জন্য দুঃখপ্রকাশ কি কেউ করেছে? এই ভুলের জন্য কেউ কি ক্ষমা চেয়েছে? তারা তাদের ঔদ্ধত্য, তারা ঠিকই সে অহংকারে বুঁদ হয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে সমর্থন করে নিচ্ছে।
‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার’ বিবৃতি দিয়েছে, ‘সরকার সাংবাদিকদের ভয় দেখাতে একটি পত্রিকার রিপোর্টারকে গ্রেপ্তার করেছে, সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।’ মামলা সরকার করেনি। মামলা বেসরকারিভাবে হয়েছে। কিন্তু এ অপরাধের কি কোনো শাস্তি হবে না? ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার’ তাদের দেশে যদি এ রকম ঘটনা ঘটত তাহলে কি করত? তার কি বিচার হতো না? এটার কি শাস্তি হতো না?
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, একটি বাচ্চাকে কীভাবে ব্ল্যাকমেইলিং করা হলো। বলা হলো স্বাধীনতা দিয়ে কি করব? স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধের পাশে যারা একটা বাচ্চাকে ব্যবহার করে দিনমজুরের নামে একটা উদ্ধৃতি দিয়ে জঘন্য অপরাধ করেছে, এ জঘন্য অপরাধের শাস্তি তাদের পাওয়া উচিত।
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব আবার গণঅভ্যুত্থানের হুমকি দিলেন। গতকাল তাদের অবস্থান কর্মসূচি দেখলাম। অবস্থান কর্মসূচিতে পাঁচ থেকে সাতশ লোকের উপস্থিতি। আমাদের জেলা পর্যায়েও এক হাজারের কম হয় না।
রোজার দিনে রাস্তা বন্ধ করে মানুষকে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে শুধু। এ দিয়ে অভ্যুত্থান হয় না। দেখতে দেখতে ১৪ বছর চলে গেল, মানুষ বাঁচে কয় বছর। আরও অপেক্ষা, সেসব ভুলে যান। জনগণ ছাড়া গণঅভ্যুত্থান হবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন বিএনপির কর্মীরাই হতাশ। গণঅভ্যুত্থান চলে গেল গাবতলী, গোলাপবাগের গরুর হাটে। সেখান থেকে গণঅভ্যুত্থান চলে গেল নীরব পদযাত্রায়, পথ হারিয়ে পদযাত্রা দাঁড়িয়ে গেল মানববন্ধনে, মানববন্ধন থেকে এখন বসে পড়ছে। তাদের আন্দোলনও বসে পড়েছে। গণঅভ্যুত্থান আর দাঁড়াতে পারবে না। আমরা আমাদের শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে এগিয়ে যাব।
ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
জেএন/পিআর