চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা। বিশ্বকে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব সকলের। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছেন।
দেশে সরকারিভাবে স্বল্প খরচে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে নিজেকে সচেতন হতে হবে। এ ক্ষেত্রে জাঙ্ক ও ফাস্ট ফুড পরিহারের কোন বিকল্প নেই।
আজ শুক্রবার (৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অডিটরিয়ামে আয়োজিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের র্যালি পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’। বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা-ইপসা, এফপিএবি ও সীমান্তিক’র সহযোগিতায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভার পূর্বে সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। চিকিৎসক, নার্স, এনজিও প্রতিনিধিরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথি বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সেবা প্রদানে আমাদেরকে আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে। তাদের সেবাদানের লক্ষ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ১৩ হাজার ৫’শ কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছেন। যা পূর্ব এশিয়াতে অনেক সরকার প্রধানের ঈর্ষনীয় কর্মসূচী।
কমিউনিটি ক্লিনিকে ৩০ ধরণের ঔষধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়ে থাকে। প্রতি মাসে প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা নেন। চট্টগ্রাম জেলায়ও ৫৩৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে। ফলে জনগণ কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে। চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি প্রত্যন্ত এলাকায় পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণে প্রতিটি পরিবারকে উদ্বুদ্ধ ও সচেতন করতে হবে।
সিভিল সার্জন আরও বলেন, শুধু শারীরিক নয়, আমাদেরকে সামাজিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। আগামী ২০৩০ সালে এসডিজি’র গোল অর্জনে সর্বত্র স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সবারই দায়িত্ব রয়েছে। সকলের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে সুখী-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য সেক্টরের এসডিজি অর্জনের অনেক ইতিবাচক উপসর্গ ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। দেশের সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক।
স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরে দেশের প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্য মিলেছে। শূন্য থেকে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যু হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যকে ইতোমধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)।
শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে সাফল্যের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমডিজি অ্যাওয়ার্ড-২০১০ অর্জন করেছেন।
ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোঃ ওয়াজেদ চৌধুরী অভির সভাপতিত্বে ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা. মোঃ নওশাদ খান, এমওডিসি ডা. মোঃ নুরুল হায়দার, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা থোয়াই নু মং মার্মা, প্রধান সহকারী এস.এম সাহিদুল ইসলাম ও বেসরকারী এনজিও সংস্থা-সীমান্তিক’র প্রোগ্রাম অফিসার সলিম উল্লাহ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এনজিও প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
জেএন/পিআর