চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে প্রায় সপ্তাহ ধরে। আবাসিকে ভর্তি পুরুষ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে শিশু ওয়ার্ডে।
৫০ শয্যার এ হাসপাতালে শয্যা সংকটের কারণে মহিলা ওয়ার্ডের মেঝেতে ঠাঁই নিয়ে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন রোগীরা।
শিশু ওয়ার্ডে গত তিনদিন ধরে নিজের শিশু সন্তান নিয়ে রয়েছেন মো.সাদ্দাম হোসেন নামের এক অভিভাবক। তিনি জানান, ছেলের বুকে কফ থাকায় ডাক্তার ভর্তি দিয়েছেন।
এই ওয়ার্ডে বয়স্ক পুরুষদের ভর্তি করানো হচ্ছে। অসহ্য গরমে নাভিশ্বাস উঠছে। ফ্যান দুইটি নস্ট। বাথরুমের অবস্থা কি বলবো। নিজের পকেট থেকে ৫০ টাকা দিয়ে আজ (শুক্রবার) পরিস্কার করিয়েছি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, পুরুষ ওয়ার্ডে ঝুলছে তালা। হাসপাতালের কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারী জানান, ওয়ার্ডটি গত এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে। ঠিক কি কারণে বন্ধ তা তারাও জানেন না। সম্ভবত বাথরুমের কাজের জন্য বন্ধ বলে দাবি তাদের।
রান্না ঘরের অবস্থাও শোচনীয়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্নার কাজে নিয়োজিত এক মহিলা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্যারেরা যেভাবে বলেন সেইভাবেই রান্না হয়। শুক্রবার (গত) রাতে রোগীদের জন্য ডাল, সবজি, ভাত ও ডিম দেওয়া হচ্ছে।
মহিলা ওয়ার্ডে বেড উপচে মেঝেতে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন রোগীরা। শিশু ওয়ার্ডের বাথরুমে গামলা ভর্তি বাসি ভাত, এঁটো ও নোংরা আবর্জনায় সয়লাব।
শিশু ওয়ার্ডের পুরুষ রোগী থাকায় শিশুদের মায়েরাও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। আফিয়া আকতার বলেন, রমজানের দিন, গরমও পড়ছে। তার মধ্যে বয়স্কদের সাথে শিশু সন্তান নিয়ে রয়েছি। শিশুদের বুকের দুধ পান করানোর জন্য বেডের চারপাশে কাপড় টাঙিয়ে রাখতে হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পুরাতন ভবনে মহিলা ওয়ার্ড ও শিশু ওয়ার্ড মিলিয়ে ৩৫টি বেড রয়েছে। নতুন ভবনের পুরুষ ওয়ার্ডে বেড ১৫ টি রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.প্রতীক সেন বলেন,’পুরুষ ওয়ার্ডের বাথরুমের কাজ চলায় সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
ভর্তিকৃত রোগীদের পুরাতন ভবনের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। ঠিকাদাররা কাজ শেষ করলেই সেখানে শিফট করা হবে পুরুষ রোগীদের।’
সম্প্রতি আবাসিকে রোগী বেড়ে যাওয়া ৩৪ বেডে সংকুলান না হওয়া মেঝেতেও রোগীদের বেড দিতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তবে কবে নাগাদ পুরুষ ওয়ার্ডের কাজ শেষ হবে তা জানা যায়নি।
জেএন/পূজন/পিআর