মিয়ানমারে বিরোধী গোষ্ঠীর একটি অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত শতাধিক লোক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় দেশটির সাগাইং অঞ্চলে একটি গ্রাম লক্ষ্য করে এই বিমান হামলা চালানো হয়। মিয়ানমার সামরিক বাহিনী বিমান হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে।
বুধবার (১২ এপ্রিল) স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতি নিউজকে সাগাইং অঞ্চলের সাবেক উ নে জিন লাট জানান, শিশুসহ অনেক স্থানীয় অধিবাসী নিহত হয়েছে। প্রথমদিকে হতাহতের সংখ্যা ৫০ জনেরও হলেও পরে এই সংখ্যা বাড়ে।
ইরাবতী ও অন্যান্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রকাশ করা ভিডিও এবং ছবিতে বিমান হামলার পর ভুক্তভোগীদের মরদেহের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ভবন, গাড়ি ও ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়।
একজন গ্রামবাসী জানান, বিদ্রোহী গোষ্ঠীর অনুষ্ঠানে সকাল ৭টায় একটি সামরিক যুদ্ধবিমান উড়ে এসে একটি বোমা ফেলে।
পরে একটি হেলিকপ্টার গানশিপ ২০ মিনিটের মতো গ্রামটিতে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মরদেহগুলো এত ছিন্নবচ্ছিন্ন হয়েছে যে গণনা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জাও মিন তুন অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিরাপত্তা বাহিনী সাগাইং-এর পা জি গি গ্রামে সেনা শাসনের বিরোধীদের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এ হামলা চালায়।
তিনি দাবি করে, নিহতদের মধ্যে কয়েকজন ইউনিফর্ম পরিহিত অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধা ছিল। তবে বেসামরিক পোশাক পরা কিছু লোক থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, ফেব্রুয়ারি ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারির মধ্যে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী কমপক্ষে ৬০০টি বিমান হামলা চালিয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে কাচিন রাজ্যে একটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর একটি কনসার্টে মিয়ানমারের বিমানবাহিনী যুদ্ধবিমান থেকে তিনটি বোমা নিক্ষেপ করে। তাতে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হন।
মিয়ানমারে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হলে সহিংস দমননীতি গ্রহণ করে জান্তা সরকার।
এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন কয়েক হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী। সহিংসতার জেরে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী একত্রিত হয়ে গঠন করে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)। এরপর থেকেই জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে তারা।
জেএন/পিআর