জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া’র মিডিয়া অ্যান্ড আইটি বিভাগের প্রধান সাকিব বিন কামালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
পুলিশ জানায়, সবুজবাগ থানাধীন কমলাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকা থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া’র মিডিয়া অ্যান্ড আইটি বিভাগের প্রধান সাকিব বিন কামালকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অভিযুক্ত মো. সাকিব বিন কামাল জামাতুল আনসার আল হিন্দাল শারক্বিয়ার মিডিয়া অ্যান্ড আইটি বিভাগের প্রধান।
অভিযুক্ত একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে এবং পেশায় শিক্ষক ও অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কাজে জড়িত।
২০১০ সাল থেকে সে জামায়াতুল মুসলিমিন ও হিজবুত তাহরির সংগঠনের সাথে জড়িত হয়ে উগ্রবাদ মতবাদে দীক্ষিত হয় এবং সেই লক্ষ্যে তার সমমনাদের সাথে যোগাযোগ করে একটি গ্রুপ তৈরি করে। উক্ত গ্রুপটি ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় মিটিং, অর্থ সংগ্রহ এবং রিক্রুটমেন্টের কাজ করতে থাকে।
২০১৩ সালে সাকিব বিন কামাল বৈশ্বিক উগ্রবাদের উত্থানে নব্য জেএমবি মতাদর্শের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের মতাদর্শ প্রচার প্রসারে কাজ শুরু করে এবং ২০১৫ সালে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান।
কারাগারে থাকাকালীন পরিচয় হয় সংগঠনের আধ্যাত্মিক নেতা শামিন মাহফুজ এর সাথে। শামিন মাহফুজ তাকে নব্য জেএমবি মতাদর্শ থেকে সরিয়ে তার সংগঠনে কাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। ২০১৭ সালে সাকিব বিন কামাল কারাগার থেকে বের হয়ে শামিন মাহফুজ এর নতুন সংগঠনের হয়ে কাজ করতে থাকে।
শামিন মাহফুজ এর নেতৃত্বে সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের সাথে মিলে বিভিন্ন মিটিং, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং মিডিয়া-সিকিউরিটি বিষয়ে আলাপ আলোচনা চলতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় এবং এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় সশস্ত্র প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ক্রয়, রিক্রুটমেন্ট এবং সংগঠনের নতুন নাম ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া’ দেওয়া হয়।
মো. সাকিব বিন কামাল এর আইটি ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার কারণে শামিন মাহফুজ তাকে এই সংগঠনের আইটি ও মিডিয়া বিভাগের দায়িত্ব দেয়।
শামিন মাহফুজ এর নির্দেশে সংগঠনের নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিরাপদে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গোপন যোগাযোগ অ্যাপ চালনা এবং পাহাড়ে ট্রেনিং ক্যাম্পে নাইট ভিশন সিকিউরিটি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে সাবিক বিন কামাল কাজ করে।
এছাড়া সংগঠনের মানহাজ ও আক্বিদা ইংলিশে অনুবাদ করে একটি গ্লোবাল প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে একটি গ্লোবাল অডিয়েন্স তৈরির জন্য কাজ করে।
সংগঠনে গোপনে রিক্রুটমেন্ট এবং অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যদের এই সংগঠনের হয়ে কাজ করার জন্য সাকিব বিন কামাল কাজ করে আসছিল। উগ্রবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে উত্তরা পশ্চিম ও রমনা থানায় দুটি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতকে এ সংক্রান্তে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়েরকৃত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেমরা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়েরকৃত মামলায় আটক দেখিয়ে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ (দশ) দিনের রিমান্ড আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
জেএন/পিআর