চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিক কামরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ রাফি নামে এক শিশু গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় গুলি বর্ষণের ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করার তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আরিফুল ইসলাম মানিক (৩৫), ডালিম ওরফে আব্দুল রহিম (৩৫) ও মো. মিজান (৩০)। তাদের তিনজনের বাড়ি সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নস্থ পশ্চিম গাটিয়াডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা।
বুধবার রাতে গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ। তিনি বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে গত ২৩ এপ্রিল সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়ন এলাকায় কামরুল ইসলাম নামে একজনকে গুলি করে প্রতিপক্ষের লোক। এসময় রাফি নামে ৫ বছরের এক শিশু গুলিবিদ্ধ হয়। বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
অভিযোগ পেয়ে ঘটনাটি তদন্ত শুরু করার আগে হামলায় জড়িতরা আত্মগোপনে চলে যায়। মঙ্গলবার রাতে কয়েকজনের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এসময় তিনজনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি গুলি বর্ষণের ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রটিও উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতার আসামিরা এলাকার ত্রাস হিসেবে পরিচিত উল্লেখ করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আরিফ হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আরিফের বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্র আইনে আটটি, আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে ১০টি এবং মিজানের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, দাঙ্গা–হাঙ্গামার সাতটি মামলা রয়েছে।
এ হামলার ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আরিফ হোসেন।
গত রবিবার (২৩ এপ্রিল) রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়ার পশ্চিম গাটিয়াডেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে শামসুল ইসলাম পুতুনের দোকানে বসে গল্প করছিলেন দি ডেইলি ইভেনিং নিউজের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান এসএম কামরুল ইসলাম।
তখন একই এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে শিশু রাফি রাইয়ান দাদার দোকানে চকলেট নিতে আসে। এসময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে শিশু রাফি ও সাংবাদিক এসএম কামরুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়।
ঘটনার পরদিন সোমবার (২৪ এপ্রিল) এসএম কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় ৯ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। এতে অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জনকে আসামী করা হয়।
মামলায় এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন-আরিফুল ইসলাম মানিক (৩৫), ডালিম ওরফে আব্দুল রহিম (৩৫), মো. আবিদ (২৮), মো. মিজান (৩০), মো. তাহের (৪০), মো. টিপু (৩২), মো. রিয়াদ (২৬), মো. সিফাত (২৫) এবং আবুল কাশেম (৪০)।
হামলায় গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক ও শিশুটি এখনও চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জেএন/পিআর