আজ থেকে ৯১ বছর আগে ২১ বছরের এক তরুণী কী অপার দুঃসাহসে স্বদেশী আন্দোলনে জড়িয়ে অপারেশন সাকসেসফুল করে ধরা পড়ার ভয়ে বীরের মত আত্মহনন করেন!
হ্যাঁ, আমি বলছি এক কিংবদন্তীর কথা, বীরকন্যা প্রীতিলতার কথা। আজ তার জন্মদিন। আজকের এই দিনে, অর্থাৎ ৫ মে, ১৯১১ সালে চট্টগ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন বীরকন্যা রাণী ওরফে প্রীতিলতা ওয়াদেদ্দার।
অমর বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্য সেন-এর সবচেয়ে প্রিয় আর নির্ভরযোগ্য শিষ্য প্রীতিলতা। তাই তাঁর হাতেই সপে দিয়েছিলেন পাহাড়তলি ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমনের দায়িত্ব, যা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন প্রীতিলতা। আর ওই দিনেই ইংরেজ সৈন্যদের গুলিতে আহত হন।
১৯৩২ সালে ২৪ সেপ্টেম্বর পাহাড়তলি ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করতে গিয়ে আহত হয়ে ধরা পড়েন। ওই দিনেই নিজের কাছে লুকিয়ে রাখা পটাশিয়াম সায়োনাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন।
তখন তার বয়স কত ছিলো? মোটে ২১! এই বয়সেই হাসতে হাসতে প্রাণ দিতে পারে যে তাকে কোনো বিশেষণে বিশেষায়ীত করা যায় না। উচিৎও না।
প্রীতিলতাদের মত অকূতভয় বীর যোদ্ধাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে প্রাপ্ত এই ভারতবর্ষ। গান্ধীবাদের নির্বিষ তুকতাক মন্ত্র ব্রিটিশের হাতের ওপরকার পশমেও আলোড়ন তুলতে পারেনি।
সে সময় প্রীতিলতা, মাস্টারদা, বিনয়-বাদল-দীনেশ, ভগৎ সিংদের মত সূর্য সন্তানদের প্রাণের দামে এই ভারতবর্ষ তথা বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে এবং অকৃতজ্ঞের মত তাঁদের অবদানকে ভুলেও গেছে। তাদের স্মৃতি মলিন হওয়ার আগেই আমাদের শাসকরা রীতিমত তাঁদের অবজ্ঞা-অবহেলা করেছে।
যে জাতি তার বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা করতে শেখে না, সে জাতিতে দেশপ্রেমিক বীরের জন্ম হয় না। হয় কুলাঙ্গার বিদেশি পা-চাটা মেরুদণ্ডহীনদের জন্ম।
লাল সালাম প্রীতিলতা ওয়াদেদ্দার। তোমার মত বুক ফুলিয়ে আমাদের এখনকার প্রজন্মের কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীরা লড়তে শিখুক, মরতে শিখুক এবং মরতে মরতে মারতে শিখুক।
জেএন/পিআর