নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভোগ্যপণ্যের চড়া দামে। সবজির বাজারেও মিলছে না স্বস্তি, লাগামহীন মুল্যে অস্তির হয়ে উঠছে মসলার বাজার।
শুক্রবার বেশ কয়েকটি বাজার এবং ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) খুচরা বাজারদরের তালিকা পর্যালোচনা করে দাম বাড়ার চিত্র দেখা গেছে,সবজির বাজারে যেন ‘আগুন’ লেগেছে।
যে পেঁপের কেজি ছিল ৪০ টাকা, বতর্মানে তা ৭০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় আছে-লাউ, করলা, উস্তা, কচুর লতি, বরবটি, ধুন্দুল, সজনে ডাঁটা এবং কাঁকরোল। ফলে সবজি কেনা এখন সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টসাধ্য।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি সজনে বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকায়। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। ১ কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা, যা দুই সপ্তাহ আগেও ছিল ৩৫-৪০ টাকা। প্রতিকেজি লতি, করলা, উস্তা, চিচিঙ্গা, বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ১০০-১২০ টাকা।
কম দামি সবজির মধ্যে প্রতিকেজি পাকা টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। মিষ্টিকুমড়া প্রতি পিস কাঁচা ৪০ এবং পাকাটা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় আলু প্রতিকেজি ৩৫-৪০ টাকায়। লেবু হালি ৩৫-৪০ টাকা। আর সব ধরনের শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়।
এদিকে আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আগে থেকেই মসলার দাম বেড়ে গেছে। বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ৩৫-৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো। আমদানি করা পেঁয়াজ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ পেঁয়াজ কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা।
বর্তমানে দেশি নতুন রসুনের দাম কেজিপ্রতি ১৩০-১৮০ টাকা, যা এক মাস আগেও ছিল মাত্র ৮০ থেকে ১২০ টাকা। সে হিসেবে রসুন কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা।
সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আদার দাম। বর্তমানে প্রতিকেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২২০ টাকায় এবং চায়না বা আমদানি আদা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।
প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকায়। শুকনা মরিচ ইন্ডিয়ান প্রতিকেজি ৪২০ টাকা এবং দেশি শুকনা মরিচ প্রতিকেজি ৩৭০ টাকা।
হলুদ গুঁড়া কেজি ২৫০ টাকা, গুঁড়া মরিচ কেজি ৪৫০ টাকা, ধনিয়া প্রতিকেজি ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কয়েকদিন আগে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া খোলা চিনি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়।
সপ্তাহের ব্যবধানে চাল ও ডালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আটাশ চাল ৫৫ টাকা, মিনিকেট চাল ৭২, গুটি স্বর্ণা চাল ৫০, নাজির শাইল ৮০ টাকা, পাইজাম চাল ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মসুর ডাল দেশি প্রতিকেজি ১২৫-১৩৫ টাকা এবং আমদানি মসুর ডাল ৯৫-১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অ্যাঙ্কর ডাল প্রতিকেজি ৬৫ টাকা। মুগ ডাল প্রতিকেজি ১৩০ টাকায়।
ব্রয়লার মুরগির দামে এসপ্তাহে কোনো পরিবর্তন আসেনি। প্রতিকেজি ব্রয়লার ২৪০ টাকা, লাল মুরগি প্রতিকেজি ৩৫০ টাকা, বড় সাইজের সোনালি এবং কক প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ টাকায়। দেশি পাতি হাঁস প্রতিটি ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তাছাড়া গরুর মাংস প্রতিকেজি হাড়সহ ৭৩০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি খাসির মাংসের দাম এখন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত।
দাম বেড়েছে মাছ। বাজারে আধাকেজি ওজনের বেশি ইলিশের দাম ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। এক কেজি বা তার ওপর ওজনের ইলিশের দর ১৬০০ টাকা।
এক কেজি ওজনের রুই মাছের দাম ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। কাতল মাছের কেজি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। কাচকি মাছ ৪৫০-৫০০ টাকায়, ট্যাংরা ৬০০-৭০০ টাকা, আইড় মাছ ৭০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
পাঙ্গাশ মাছ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা। সিলভার কাপ ২০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে বাজার ভেদে ৪৫০ টাকা। কার্প মাছের কেজি ২৫০ থেকে বাজারভেদে ৩০০ টাকা।
জেএন/পিআর