কক্সবাজারের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে ভাসমান ট্রলারে অর্ধগলিত ১০ জনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেনকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
শনিবার (৬ মে) রাতে মহেশখালীর চরপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন রোববার খায়ের হোসেনকে এ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কক্সবাজার আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। পরে আদালতের বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এ নিয়ে এই মামলায় এজাহারভুক্ত দুইজনসহ মোট সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের মধ্যে কামাল হোসেন ওরফে বাইট্যা কামাল, করিম সিকদার, আবু তৈয়ূব, ফজল কাদের ও গিয়াস উদ্দিন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
বর্তমানে ছয় আসামি কক্সবাজার জেলা কারাগারে আছেন। কামাল হোসেন আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি কক্সবাজার শহরে ছিলেন। তবে ট্রলারের মাঝি-মাল্লাদের সঙ্গে তার কয়েক দফার কথায় নিশ্চিত হয়েছেন যে ১০ জনের ট্রলারটি সাগরে ডাকাতি করতে নেমেছিল। ডাকাতির একপর্যায়ে কয়েকটি ট্রলারের জেলেরা ১০ জনকে জিম্মি করে প্রথমে গণপিটুনি দেন। এরপর গুম করার জন্য মরদেহগুলো বরফ রাখার কক্ষে আটকে রেখে ট্রলারটি (ডুবন্ত ট্রলার) সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া হয়।
মামলার অপর দুই আসামি (ট্রলারের মাঝি) আবু তৈয়ূব ও ফজল কাদের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, ঘটনাটি তাদের চোখের সামনে ঘটলেও এর সঙ্গে তারা জড়িত ছিলেন না।
উল্লেখ্য, গত ২৩ এপ্রিল শহরের নাজিরারটেক উপকূলে ডুবন্ত একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। ২৫ এপ্রিল কক্সবাজার সদর মডেল থানায় চারজনের নাম উল্লেখ (মহেশখালীর মাতারবাড়ির বাইট্যা কামাল, করিম সিকদার, আনোয়ার হোসেন ও বাবুল মাঝি) এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করে মামলা করেন ডুবন্ত ট্রলারের মালিক ও মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের বাসিন্দা নিহত সামশুল আলম মাঝির স্ত্রী রোকিয়া আকতার।
তাদের মধ্যে ছয়জনকে পাঁচ দিন ও বাকিদের তিন দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান এবং ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
জেএন/এমআর