১০-২০তম গ্রেডভুক্ত সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধিসহ যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করেছে নবগঠিত বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী জাতীয় পরিষদ।
শনিবার (১৩ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের আটটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত নতুন এই পরিষদের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে।
সংগঠনগুলো হলো- ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’, ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন’, ‘বাংলাদেশ সরকারি গাড়ি চালক সমিতি’, ‘বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেড কর্মচারী সমিতি’, ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’, ‘বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজ’, ‘গণপূর্ত শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’ ও ‘বাংলাদেশ ডাক কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ (বাডাকসপ)’।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী জাতীয় পরিষদের সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মো. আকতার হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়।
এছাড়া ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পরিষদে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদে’র মহাসচিব মো. রুহুল আমিন ও কার্যকরী সভাপতি মো. জামসেদ আলম, ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনে’র সভাপতি মো. হেদায়েত হোসেন ও কার্যকরী সভাপতি মো. আব্দুল হাই মোল্যা, ‘বাংলাদেশ সরকারি গাড়ি চালক সমিতির সভাপতি মো. আব্দুর রহিম হাওলাদার রানা ও সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম, ‘বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেড কর্মচারী সমিতি’র সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবু সায়েম, ‘গণপূর্ত শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নে’র সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক, ‘বাংলাদেশ ডাক কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের নির্বাহী সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও মহাসচিব মুহাম্মদ খলিলুর রহমান ভূঞা, ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’র সভাপতি মো. আবুল কাশেম, ‘বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজে’র সভাপতি মো. শাহিনুর আল-আমিনসহ আরো অনেকে। তবে পরিষদের তাদের কোনো পদে থাকবেন সেটি এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী জাতীয় পরিষদে’র সাধারণ সম্পাদক মো. আকতার হোসেন বলেন, সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সচিবালয় ও সচিবালয়ের বাইরে বহু মতভেদে একাধিক সংগঠনের সৃষ্টি হয়েছে। যারা প্রত্যেকেই নেতৃত্বের দাবিদার। কিন্তু আবার এসব সংগঠনের মধ্যে এমনও সংগঠন রয়েছে যাদের সঙ্গে সাধারণ কর্মচারীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সচিবালয়ের ভেতরে একটি সংগঠন ও সচিবালয়ের বাইরে ৭টি সংগঠন কর্মচারীদের অধিকার আদায়ে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে। এসব সংগঠনগুলো বিভিন্ন সময়ে সরকারের কাছে পৃথক পৃথকভাবে তাদের দাবি উপস্থাপন করেলেও সেটি উপেক্ষিত হয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে এই আটটি সংগঠনের নেতারা অহমিকা ভুলে এক মঞ্চে মিলিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে গত ১১ মে এই আটটি সংগঠনের নেতাদের নিয়ে গঠিত হয় সরকারি কর্মচারীদের সর্ববৃহৎ মোর্চা ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী জাতীয় পরিষদ’। যা আজ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করছে।
এ সময় তিনি সরকারি কর্মচারীদের অধিকার আদায়ে তিন দফা দাবিও তুলে ধরেন। সেগুলো হলো- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী জাতীয় পরিষদে’র নেতাদের সাক্ষাতের সুযোগ দান; অবিলম্বে নবম জাতীয় বেতন স্কেল বাস্তবায়ন; নবম জাতীয় বেতন স্কেল বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য ১০-২০তম গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘভাতা প্রদান।
এছাড়া ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী জাতীয় পরিষদে’র মাধ্যমে বেসামরিক সরকারি কর্মচারীদের নিয়ে একটি ট্রাস্ট গঠন করা হবে বলেও জানান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আকতার হোসেন। যার নাম দেওয়া হবে ‘সরকারি কর্মচারী জাতীয় কল্যাণ ট্রাস্ট’। এই ট্রাস্টের মাধ্যমে অবসরপ্রাপ্ত অসহায় কর্মচারীদের আর্থিক সুবিধা প্রদান, অসুস্থ কর্মচারীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, কর্মচারীদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদান ও দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে নিরীহ মানুষদের সহায়তা প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি।
জেএন/এমআর