কক্সবাজার উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে অতি প্রভল ঘূণিঝড় ‘মোখা’। ১৯০ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়টি।
কক্সবাজারকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ৮ থেকে ১০ ফুট জলোচ্ছ্বাস হতে পারে উপকূলীয় অঞ্চলে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, রোববার ভোরে বা সন্ধ্যার দিকে টেকনাফ, সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে।
এদিকে, মোখার প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। সকাল থেকে থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সাগর বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট জোয়ারের পানি বেড়েছে।
ইতিমধ্যে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে শনিবার দুপুর থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার কাজ শুরু করেন জেলা প্রশাসন।
নারী, বয়স্ক, শিশু এবং গাবাদি পশু সহ উপক‚লীয় এলাকার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। জেলায় ৫৭৬ টি আশ্রয় কেন্দ্রে ক্রমাগত মানুষ আসতে শুরু করেছে এখনো ।
জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি কক্সবাজার পৌরসভার পক্ষ থেকে মেয়র মুজিবুর রহমান পৌরসভার টিম নিয়ে শুকনো খাবারের পাশাপাশি রাতের খাবারের প্যাকেট নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটে চলছে।
বিপদ সামনে রেখে সকল প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে কক্সবাজারের প্রশাসন। ইতিমধ্যে ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে সরিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ জানিয়েছেন, প্রশাসনের পক্ষে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে মোখা’ মোকাবেলায় তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
তিনি জানান, ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক, পর্যাপ্ত গাড়ি রয়েছে। উপক‚লীয় এলাকা জুড়ে মাইকিং করে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।
দুপুরের পর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আসে নাই তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জোরপূর্বক ভাবে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসছে ।
বিভীষণ কান্তি দাশ জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রশাসনের আলাদা প্রস্তুতি রয়েছে। যেখানে ৩৭ টি আশ্রয় কেন্দ্রে সকলকে আনা হয়েছে। দ্বীপের জন্য আলাদাভাবে ৫ মেট্টিন চাল ও নগদ ১ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে।
সোনাদিয়া দ্বীপ থেকে মানুষকে মহেশখালীতে নিয়ে আসা হয়েছে। জেলার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও টাকা মজুদ রয়েছে। উপজেলা ভিত্তিক যানবাহন রয়েছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতের মুল কেন্দ্র কক্সবাজার। এখানে প্রাণহানি রোধ, ক্ষয়ক্ষতি কমানো, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা প্রশাসন সহ অন্যান্য সংস্থার সাথে পুলিশ মাঠে রয়েছে।
যারা আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে না তাদের বুঝিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে। ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো নিশ্চিত করবে পুলিশ।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপকূলের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ৩২ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সমুদ্র সৈকতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিচকর্মীরা কাজ করছে।
জেএন/পিআর