অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে চট্টগ্রামে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থায় নগরের পাহাড়ি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে তৎপর হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
শনিবার (১৩ মে) সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। একপর্যায়ে রাত ৮টার দিকে জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান নিজেই হ্যান্ডমাইক নিয়ে প্রচারণায় নেমে পড়েন।
এসময় জেলা প্রশাসক ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের উদ্দেশে বলেন, চট্টগ্রামে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে। এতে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা বেশি। আপনারা দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে অথবা অন্য কোথাও আত্মীয়ের বাসা থাকলে সেখানে যেতে পারেন। এবার অনুরোধ করা হচ্ছে। আপনাদের নিরাপদে সরাতে আমরা প্রয়োজনে কঠোর হব।
এসময় এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদ কামাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মো. তৌহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস থেকে জানা যায়, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ভারি (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারি (৮৯ মিলিমিটার পর্যন্ত) বর্ষণ হতে পারে। এর ফলে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।
এ কারণে চট্টগ্রাম নগরে ২৬ পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসরত প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদে সরাতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। শনিবার নগরের আকবর শাহ থানার ফয়েজ লেক সংলগ্ন ১ নম্বর ঝিল, ২ নম্বর ঝিল, ৩ নম্বর ঝিল, শান্তিনগর এলাকা, খুলশী থানার লালখান বাজারের মতিঝর্ণা, বাটালি হিল, পোড়াকলোনী পাহাড়, চান্দগাঁও থানার আমিন জুট মিলস পাহাড়, টাংকির পাহাড়, ভেড়া ফকিরের পাহাড়, বার্মা কলোনীসহ পাহাড়ি এলাকায় মাইকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে চট্টগ্রাম শহর ও বিভিন্ন উপজেলা মিলিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে ১ হাজার ৩০টি আশ্রয়কেন্দ্র। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা ৫ লাখ এক হাজার ১১০ জন। জেলায় ৮ হাজার ৮৮০ জন সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তারা আবহাওয়ার বার্তা প্রচার করছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের রেসকিউ বোট ও মেডিকেল টিম। পর্যাপ্ত সরঞ্জামসহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম প্রস্তুতও রাখা হয়েছে।
জেএন/এমআর