ভাংড়ি ব্যবসায়ীকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ আদায়ের অভিযোগে পুলিশের দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই)কে সাময়িক প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন, কাজীপুর থানা পুলিশের দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল হোসেন ও শহিদুল ইসলাম শহিদ। পরে তাদের সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
বুধবার (১৭ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাজীপুর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ শ্যামল কুমার দত্ত।
ভুক্তভোগী লাভলু ইসলাম সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের একডালা গ্রামের মৃত কোরবান আলীর ছেলে ও স্থানীয় ভাংড়ি ব্যবসায়ী।
জানা গেছে, লাভলু ইসলাম গত সোমবার (১৫ মে) সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কাজীপুর থানার দুই এসআইকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত শনিবার (১৩ মে) রাতে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার পুলিশের উপ-পরিদর্শক আবুল হোসেন ও শহিদুল ইসলাম শহিদসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সদর উপজেলার একডালা গ্রামে অবস্থিত লাভলু ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়। পরে লাভলু ইসলামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যায়।
স্থানীয় প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন লোকের উপস্থিতিতে তল্লাশি চালায়। এ সময় লাভলু ইসলাম এমন তল্লাশির কারণ জানতে চাইলে এসআই আবুল হোসেন তাকে বকাঝকা করে ও হুমকি দেয়।
এক পর্যায়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স চেক করতে হবে বলে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। প্রায় দুই কিলোমিটার উত্তরে মহিষামুড়া চৌরাস্তা বাজারের পূর্বপাশে মহিলা মাদরাসার পেছনে নিয়ে গিয়ে লাভলুকে আটকে রাখে।
তার কাছে থাকা ব্যবসার ৩০ হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। পরে লাভলু ইসলামের চোখ বেঁধে আরও ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। তাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দিলে মামলায় ফাঁসানোসহ মারধরের ভয় দেখানো হয়।
নিরুপায় হয়ে লাভলু ইসলাম রতনকান্দি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ওসমান গনি ও আব্দুস সাত্তারকে ফোন দিয়ে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে মহিষামুড়া মহিলা মাদরাসার পেছনে আসতে বলেন।
এ সময় রতনকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, একডালা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সাত্তারসহ পাঁচ থেকে সাতজন ঘটনাস্থল মহিষামুড়া এসে উপস্থিত হন।
লাভলু ইসলামের কাছে দাবি করা ৩০ হাজার টাকা নিয়ে উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল হোসেন ও এসআই শহিদুল ইসলাম শহিদের সঙ্গে আলোচনা হয়। এক পর্যায়ে আরও ১০ হাজার টাকা তাদের দেয়া হয়। এভাবে মোট ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে লাভলুকে দুই পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেয়া হয়।
এ ব্যাপারে কাজীপুর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ শ্যামল কুমার বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাদের ক্লোজড করে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ লাইলে পাঠানো হয়েছে। তারা এটা করে থাকলে অপরাধ করেছেন।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেএন/পিআর