অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে শিশু কেনাবেচার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন-র্যাব। উদ্ধার করা হয়েছে অপহরণের পর কেনাবেচার শিকার হওয়া এক শিশুকে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব-২ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন খান।
গত ২৬ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকায় বাসার সামনে থেকে অপহৃত হন তিন বছরের শিশু মো. সিদ্দিক। তার সন্ধানে নেমেই শিশু কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে ধরেছে র্যাব সদস্যরা।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন- অপহরণকারী পীযূষ কান্তি পাল (২৯), তার সহযোগী ও স্ত্রী রিদ্ধিতা পাল (২৫), শিশু বিক্রির মধ্যস্থতাকারী সুজন সুতার (৩২), শিশুর ক্রেতা পল্লব কান্তি বিশ্বাস (৫২) ও তার স্ত্রী বেবী সরকার (৪৬)।
র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রথমে তারা শিশু কেনাবেচার মধ্যস্থতাকারী সুজন সুতারকে ঢাকার শাহবাগ থেকে আটক করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাভার থেকে ধরা হয় পীযুষ ও রিদ্বিতা দম্পতিকে।
এরপর বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার তাড়াসি গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে।
তদন্তে নেমে সিসিটিভির ফুটেজ জোগাড় করে র্যাব দেখতে পায়, ২৬ এপ্রিল বেলা ১টা ৭ মিনিটে শিশুটিকে কোলে নিয়ে পালাচ্ছে পীযুষ। চকলেট ও আম খাওয়ানোর পর বড় বোন হুমায়রাসহ আরও সাত আটজন শিশুর সামনেই অপহরণ করা হয় সিদ্দিককে।
এই ঘটনায় শিশুটির বাবা গত ২৭ এপ্রিল মোহাম্মদপুর থানায় প্রথমে একটি জিডি ও পরে মামলা করেন। পরে তার আবেদনে মামলার তদন্তে নামে র্যাব।
র্যাবের দাবি, এই চক্রের মূলহোতা পীযুষ কান্তি। তার স্ত্রী রিদ্ধিতা পাল ‘সনাতনী উদ্যোক্তা ফোরাম’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে বাচ্চা বিক্রির পোস্ট দেয়।
সেখানে সুজন সুতার নামের একজন যোগাযোগ করলে নিজের ১১ মাসের সন্তান প্রনিল পালের ছবি দিয়ে দরিদ্র গৃহকর্মীর সন্তান হিসেবে তাকে বিক্রির প্রস্তাব দেয়।
সুজনের আত্মীয় পল্লব কান্তি বিশ্বাস ও বেবী সরকার শিশুটিকে কেনার জন্য দুই লাখ টাকায় চুক্তি করে। কিন্তু নিজের সন্তানকে না দিয়ে তিন বছরের সিদ্দিককে চুরি করে তাদের কাছে বিক্রি করে পীযুষ।
র্যাব-২ অধিনায়ক আনোয়ার হোসেন খান বলেন, অপহরণকারী পীযূষ কান্তির বিরুদ্ধে এর আগেও মানবপাচারের মামলা হয়েছিল।
জেএন/পিআর