দাম কিছুটা কমতির দিকে থাকায় আরও দুই-তিনদিন বাজার পরিস্থিতি দেখে পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
রোববার (২১ মে) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা জানান।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘মধ্যম আয়ের, সীমিত আয়ের সব মানুষেরই কষ্ট হচ্ছে। ৮০ টাকা কেজি তো পেঁয়াজ হতে পারে না। নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে… আমরা শেষ পর্যন্ত চাষির স্বার্থটা দেখতে চাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা উচ্চ পর্যায়ে, নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করেছি। আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। ইনশাআল্লাহ দুই-তিনদিনের মধ্যে আপনারা সিদ্ধান্ত পাবেন- যে আমরা বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করবো কি না।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সবকিছুর একটা ধারাবাহিকতা থাকে, কিন্তু গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দামে সে ধারাবাহিকতা রাখা যায়নি। সাধারণত বাজার সাপ্লাই এবং ডিমান্ডের ওপর নির্ভর করে। গত বছর পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকা সত্ত্বেও কিছু অসাধু আড়ৎদারের কারণে গুদামে অনেক পেঁয়াজ পঁচে গেছে।
তিনি বলেন, আমাদের মোট ভূখণ্ডের মোট ৬০ ভাগ জমি আবাদ করা হয়। আবার একই জমিতে একাধিক ফসল হচ্ছে। আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার সঙ্গে প্রতিবছর প্রায় ২০ থেকে ২৪ লাখ মানুষ নতুন করে যোগ হচ্ছে। আমরা দানাদার খাদ্যতে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকলেও প্রতিবছর ক্রমবর্ধমান এই জনসংখ্যার কারণেই বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা বেশি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজের দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা হওয়াও কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বিষয়টা মনিটরিং করছি। আমাদের অফিসারদের মাঠ পর্যায়ে পাঠিয়েছি। তারা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে, কৃষকদের ঘরে পেঁয়াজ থাকলেও দাম বাড়াবে- এমন আশায় তারা অনেকেই মজুদ করে রেখে দিচ্ছেন। এতে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজ খুবই পচনশীল ফসল। এটি রাখা কঠিন। ধান কিংবা সরিষা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু পেঁয়াজ রাখা যায় না, শুকিয়ে যায়। শুকিয়ে গেলে ওজন কমে যায়, তখন দাম অনেক কমে যায়।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, পেঁয়াজের শেলফ লাইফ কম। আলুর মতো না। তবে আমরা কিছু প্রযুক্তি নিয়ে এসেছি, কীভাবে গুদামে রাখা যায়। যদি শেলফ লাইফ বাড়ান যেত, তাহলে আমাদের যে উৎপাদন হচ্ছে, তাতে পেঁয়াজ দিয়ে বাজার ভাসিয়ে দেওয়া যেত।
এর আগে শুক্রবার রংপুরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, দাম না কমলে দু-একদিনের মধ্যে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আমরা লক্ষ্য রাখছি। আপাতত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। যদি দু-একদিনের মধ্যে দাম না কমে তাহলে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে।
চিনির দাম প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, চিনির দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে তার প্রভাব এখনো পড়েনি। সরকার নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিকার কাজ করছে। আশা করছি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কাঁচাবাজারের সবকিছু আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি খুব যে খারাপ তা কিন্তু নয়। দুটোতেই একটুখানি ঝামেলা হয়েছে। গতানুগতিকভাবে গ্লোবাল মার্কেটে দাম বেড়েছে, যেমন ডালের দাম বেড়েছে। কাঁচাবাজারের দাম কখনো বাড়ে আবার কখনো কমে।
জেএন/এমআর