চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুরে নাবালিকা শ্যালিকাকে নির্মমভাবে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক আসামি দুলাভাই মো. শাহ পরানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
গ্রেফতার এড়াতে দীর্ঘ ১৩ বছর যাবৎ চট্টগ্রাম মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে ছিলেন শাহ পরান।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নূরুল আবছার জানান, আসামি মো. শাহ পরান এবং নিহত ভিকটিমের বড় বোন দেলোয়ারা বেগম ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
বিয়ের পর হতে শাহ পরান তাদের সংসারের অভাব অনটন এবং পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করতেন।
দেলোয়ারা বেগম স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিয়ের কিছুদিন পর স্বামীকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামি শাহ পরান দেলোয়ারা বেগমকে বিভিন্ন সময় প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতেন।
২০১০ সালের ১ এপ্রিল দেলোয়ারা বেগম ও তার ১০ বছর বয়সী ছোট বোন ফারহানা ইয়াছমিন মনি খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়লে রাত আনুমানিক ৪টায় আসামি শাহ পরান তার ভগ্নীপতি নাসির নাসিমসহ দেলোয়ারা বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘরে প্রবেশ করে।
পরে শাহ পরান ঘুমন্ত দেলোয়ারা বেগমের বুকের ডান পাশে চুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করেন। এসময় দেলোয়ারা বেগমের চিৎকারে তার মা এবং ছোট বোন ফারহানা ইয়াছমিন ঘুম থেকে জেগে আসামিদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে আসামি শাহ পরান তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে ফারহানার পেটে নির্মমভাবে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে।
এতে ভিকটিম ফারহানার নাড়িভুড়ি বের হয়ে আসে এবং ঘটনাস্থলেই সে মৃত্যু বরণ করে। গুরুতর আহত দেলোয়ারা বেগমকে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
পরে ভিকটিমের মা বাদি হয়ে চট্টগ্রাম জেলার ভুজপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামি শাহ পরান বিজ্ঞ আদালতের নিকট হতে জামিন নিয়ে পলাতক হয়।
দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় ও কোর্টে হাজিরা না দেওয়ার আসামির অনুপস্থিতিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল গত ০৯ এপ্রিল ২০১৯ সালে আসামি শাহ পরানকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। অবশেষে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
গ্রেফতার আসামি সংক্রান্ত পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা।
জেএন/পিআর