আজ তুরস্কে অগ্নিপরীক্ষায় এরদোয়ান-কেমাল

তুরস্কে আজ দ্বিতীয় দফার ভোটেই নির্ধারিত হতে যাচ্ছে ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ফের ক্ষমতায় আসছেন, নাকি আমলা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া কেমাল কিলিচদারোগলু প্রথমবারের মতো মসনদে বসছেন।

- Advertisement -

প্রথম দফার ভোটে কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় আজকের এ ভোটে নির্ধারিত হবে তুরস্কের নতুন প্রেসিডেন্ট, যার দিকে এখন সারা বিশ্বের চোখ। তুরস্কের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় দফায় গড়ানো এ প্রেসিডেন্ট ভোটের আগে দুই প্রার্থীই পরস্পরকে সমালোচনার জালে বিদ্ধ করেছেন। দিয়েছেন নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি। তবে প্রথম দফার নির্বাচনে তৃতীয় হওয়া সিনান ওগান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে সমর্থন দেওয়ায় বর্তমান প্রেসিডেন্টই ফের ক্ষমতায় আসতে পারেন বলে অনেকে মনে করছেন। আবার প্রথম দফায় ১২ লাখ ভোট পাওয়া ভিক্টোরি পার্টি কেমালকে সমর্থন দেওয়ায় দেখা দিয়েছে টান টান উত্তেজনা। তাই ‘অগ্নিপরীক্ষা’ হয়ে ওঠা এ নির্বাচনে শেষ হাসি কে হাসবেন, তা জানতে কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।

- Advertisement -google news follower

তুরস্কের এবারের জাতীয় নির্বাচনে চরম নাটকীয় পরিস্থিতি দেখা গেছে। দেশটির নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হতে হলে কোনো প্রার্থীকে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। কিন্তু গত ১৪ মে প্রথম দফার ভোটে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট পাননি। তাই নির্বাচন গড়ায় দ্বিতীয় দফায়। প্রথম দফার ভোটে এরদোয়ান ৪৯ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিলেন। কেমাল পেয়েছিলেন ৪৫ শতাংশ। প্রথম দফার ভোটের ফলে এরদোয়ানের চেয়ে প্রায় ২৫ লাখ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন কেমাল। আর সিনান ওগান ছিলেন তৃতীয় অবস্থানে। তার ঝুলিতে যায় ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ ভোট। এখন দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে সিনান সমর্থন দিয়েছেন এরদোয়ানকে। ফলে সিনান ওগান একজন কিংমেকার হয়ে উঠেছেন। তাই এরদোয়ানের ফের ক্ষমতায় আসাটা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে অনেকে মনে করছেন। তবে তুরস্কে অভিবাসনবিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত ভিক্টোরি পার্টি প্রথম দফার নির্বাচনে ১২ লাখ ভোট পেয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় দলটি কেমালকে সমর্থন দিয়েছে। এই দলের নেতা উমিত ওজাদাগ বলেন, ক্ষমতায় গেলে ১ কোটি ৩০ লাখ সিরীয় শরণার্থীকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে নিজ দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে, এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কেমাল। তাই তাকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা উচিত। এ ছাড়া প্রথম দফায় ভোটকেন্দ্রে না যাওয়া প্রায় ৮০ লাখ ভোটারও আজ প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে পারেন বলে জানা গেছে।

এদিকে, শুক্রবার শেষ সময়ের প্রচারণায়ও ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন দুই প্রার্থী রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও কেমাল কিলিচদারোগলু। এরদোয়ানের অভিযোগ, কেমাল ঘৃণা ছড়াচ্ছেন। বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। রাজধানী আঙ্কারায় এদিন এক সমাবেশে এরদোয়ান বলেন, নির্বাচনে কেমালের জয় হলে সন্ত্রাসবাদ জিতে যাবে। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কেমালের ওঠাবসা। তিনি (কেমাল) নির্বাচনে বিজয়ী হলে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর জয় হবে। কাজেই তাকে নির্বাচিত হতে দেওয়া যাবে না। অন্যদিকে কেমাল সিরিয়া থেকে আসা শরণার্থীদের ইস্যু সামনে এনে জাতীয়তাবাদী ভোট নিজের ঝুলিতে ভরার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে এরদোয়ান অবশ্য বলেছেন, ইতোমধ্যে সিরীয় শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তিনি। আবারও ক্ষমতায় গেলে এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হবে। আরও বেশিসংখ্যক শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো হবে।

- Advertisement -islamibank

উল্লেখ্য, এ সপ্তাহে চার ঘণ্টা বাবালা টিভি নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ভোটের প্রচার চালিয়েছেন কেমাল। ভোটার ও সমর্থকদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি। ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ এই অনুষ্ঠান দেখেছেন। বিশেষত তরুণদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এই অনুষ্ঠান। জাতীয়তাবাদী গুড পার্টির তরুণ প্রচারক মেহতেপ বলেন, ইউটিউবে কেমালের এই অনুষ্ঠান তরুণদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে। অনেক তরুণ ভোটার প্রথম দফায় ভোটকেন্দ্রে যাননি। তারা এখন নতুন করে ভাবছেন। আঙ্কারার দক্ষিণ-পূর্বের বালা শহরে কাবাবের দোকান চালান আল ওজদেমির। এরদোয়ানের দল একে পার্টির দপ্তরের সড়কে তার দোকান। তিনি বলেন, ‘আগেরবার এরদোয়ানকে ভোট দিয়েছি। এবারও দিব। আমি চাই, তিনি আবারও পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় আসুক।’ তবে বিভক্ত হয়ে পড়া ভোটাররা শেষ পর্যন্ত কাকে বেছে নেবেন, তা জানতে খুব একটা সময় অপেক্ষা করতে হবে না।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM