চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ এলাকার আমেরিকান হাসপাতালে অনিবন্ধিত ঔষধ বিক্রির বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে উঠার এবং নানা অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর চট্টগ্রাম। উক্ত অভিযানে ৬ লাখ টাকার ওষুধ জব্দ করে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এসময় হাসপাতালের গেটের সামনে অবস্থিত মা ফার্মেসি, মা মেডিকেয়ার এবং স্বাগতা ফার্মেসি থেকে চীন, ভারত সহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ৬ লাখ টাকার অনিবন্ধিত ঔষধ জব্দ করা হয় এবং প্রত্যেক ফার্মেসিকে ২০ হাজার করে মোট ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এসময় ফার্মেসী মালিকরা অভিযোগ করেন, সরকারী হাসপাতালের ডাক্তাররাই এসকল অনিবন্ধিত ঔষধ প্রেসক্রিপশন করছেন।
এসময় বেশ কিছু রোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ডাক্তাররা এমন ওষুধ লেখেন যা এখানে অবস্থিত ৩/৪ টা ফার্মেসি ব্যাতীত অন্য কোথাও পাওয়া যায় না এবং রোগীদের প্রেসক্রিপশন চেক করে দেখা যায় সরকারি হাসপাতালের স্লিপে বিভিন্ন অনিবন্ধিত ঔষধ প্রেসক্রিপশন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফার্মেসি মালিক জানান, প্রতিটি বিদেশী ক্রীমের দাম এক থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রতি ক্রীমে ডাক্তার ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত কমিশন পান। এছাড়া এই হাসপাতালের সকল রোগীদের মেডিলিভ নামক একটি ল্যাবে টেস্ট করানোর জন্য বলে দেয়া হয়। হাসপাতালের সামনেই দালালরা দাঁড়িয়ে থাকে। সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অনিয়মের সরাসরি প্রমাণ পেয়ে একটু বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন মোবাইল কোর্টের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত।
তিনি পরিচালক স্বাস্থ্য, এর সাথে কথা বলে এসকল অসাধু ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
এসময় সেখানে উপস্থিত ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম এর সহকারী পরিচালক এস এম সুলতানুল আরেফীন বলেন, এ ওষুধ গুলো ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন এর নিবন্ধিত নয়। এগুলো কোন ফার্মেসিতে বিক্রি করা যাবে না এবং কোন ডাক্তার এগুলো প্রেসক্রিপশন করতে পারবে না। কিন্তু এই সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা সব জেনেও প্রেসক্রিপশন করছেন তা বোধগম্য নয়।
তবে প্রথমিকভাবে ডাক্তাদের সতর্ক করবে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়া কোন দেশি বা বিদেশি ওষুধ বিক্রি ও ডাক্তার প্রেসক্রাইব করতে পারবে না। এইটা বেআইনি কাজ। ইতিমধ্যে অ্যামেরিকান হাসপাতালের প্রধানকে বলা হয়েছে। আগামীতে এইরকম কাজ আবার হলে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেএন/এমআর