নিরাপদ সড়ক দাবিতে চলমান ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
২৯ জুলাই ঢাকায় বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়ক দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নিয়ে যানবাহনের ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স চেক এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনয়নের চেষ্টা করে। এ সময় অধিকাংশ গাড়ির চালকদের কাছে বৈধ লাইলেন্স পাওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীরা এসব গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশদের বাধ্য করে। ট্রাফিক আইন প্রয়োগে বাধ্য হওয়ায় গাড়ি এবং নিজেদের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে শহর এলাকাসহ দূরপাল্লার গাড়ি বন্ধ করে দেয় চালক-মালিকরা। এতে বিপাকে পড়েছে কর্মজীবীসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। এ অবস্থায় সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য অঘোষিত গণপরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার, অনতিবিলম্বে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনয়ন, ভোগান্তি ও হয়রানি লাঘবের দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম নেতৃবৃন্দ।
তারা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন রুখে দিতে মালিক-শ্রমিক গ্রুপের অপতৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি সরকার ইতোমধ্যে মেনে নিয়েছে। শিক্ষার্থীরা জাতির সুপ্ত বিবেককে জাগ্রত করেছে। সে কারণে জাতি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তবে কিছু রাজনৈতিক নেতাকর্মী সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামাজিক আন্দোলনকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারে গুজব ছড়াছে। যা নিন্দনীয়। রাজনৈতিক দলগুলি কিভাবে নিজেরা ক্ষমতায় আরোহণ ও থাকতে পারবে তা নিয়েই ভাবছে, সাধারণ মানুষের স্বার্থ তাদের কাছে গৌণ। যার জলন্ত প্রমাণ এ আন্দোলনে তাদের ভূমিকা।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনয়নে প্রধান বাধা মালিক-শ্রমিক গ্রুপ, যারা কোনো আইন ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না। যতবারই গণপরিবহন নিয়ে সভা-সেমিনার ও আলোচনা হয়, ততবারই তাদের অন্তর্কোন্দলের কারণে তা ফলপ্রসূ হতে পারেনি। তাই গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনয়ন ও নৈরাজ্য বন্ধে যে কোনো আলোচনায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের পাশাপাশি ভোক্তা সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তা না হলে জনস্বার্থ উপেক্ষিত থেকে যাবে। অন্যদিকে গণপরিবহনে অনিয়ম, শৃঙ্খলা আনতে নাগরিক নজরদারি বাড়ানো দরকার। এ বিষয়ে সরকারকে আশু ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কে এন এম রিয়াদ প্রমুখ।
জয়নিউজবিডি/আরসি