রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য পারমাণবিক জ্বালানি আমদানি ও সংরক্ষণের অনুমোদন পেয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন। একইসঙ্গে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান বুরুশকে পারমাণবিক জ্বালানি পরিবহণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক আনবিক সংস্থা (আইএইএ)’র নির্দেশনা অনুযায়ী শর্ত পূরণ করায় প্রতিষ্ঠান দুটিকে এই অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিএইআরএ)।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় পাবনার একটি হোটেলে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে এই অনুমোদন প্রদান সম্পন্ন হয়।
এর মধ্য দিয়ে পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক জ্বালানি আমদানি ও সংরক্ষণের সক্ষমতা অর্জন করলো বাংলাদেশ। একইসঙ্গে পারমাণবিক জ্বালানির মালিক হলো বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোজাম্মেল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাশান ফেডারেশনের রোসটেকনাজোরের ডেপুটি চেয়ারম্যান এলেক্সী ফেরাপন্তভ, রোসাটমের ডেপুটি ডিরেক্টর মি. এ. ওয়াই পেত্রোভ, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অশোক কুমার পাল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর।
স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড. সত্যজিত ঘোষ। এ সময় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, আন্তর্জাতিক আনবিক সংস্থা (আইএইএ)’র প্রত্যেকটি চাওয়া আমরা পূরণ করেছি। তারাও (আইএইএ) আমাদের সহযোগিতা করেছে, আমাদের ভুল ধরে আবার সংশোধন করে দিয়েছে, এজন্য আইএইএকে ধন্যবাদ জানাই।
এই অর্জন দেশবাসীর। সারা বাংলাদেশের মানুষের চিন্তা-চেতনা ও দরদের জন্যই আমরা এই সক্ষমতা অর্জন করেছি। কোনো শক্তিই এই অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবে না।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, এই জ্বালানি আসার সঙ্গে আমাদেরকে আন্তর্জাতিক আনবিক সংস্থা (আইএইএ)’র নোটিফিকেশন করতে হয়। আজকের অনুমোদনের মাধ্যমেই সেই সক্ষমতা অর্জন করেছি এবং পারমাণবিক জ্বালানির মালিক হলো বাংলাদেশ। এই জ্বালানির ব্যবহার করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং নিরাপত্তা বিষয়টি তদারকি করবে বিএইআরএ।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড. সত্যজিত ঘোষ বলেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর অথবা অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ পারমাণবিক জ্বালানি আসবে।
এই জ্বালানি নিয়ে আসার জন্য যে আমদানি, পরিবহণ ও সংরক্ষণের ৩টি লাইসেন্স দরকার, সেগুলো বিএইআরএ দিচ্ছে। আজকের লাইসেন্স প্রদান বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক।
জেএন/পিআর