টানা দুবার উইম্বলডনের ফাইনালে উঠেছিলেন ওন্স জাভেউর। কিন্তু দুবারই স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়লেন এই তিউনিসিয়ান টেনিস তারকা। এছাড়া গতবছর ইউএস ওপেনেও আফ্রিকান জাভেউর রানার্স-আপ হয়ে ফিরেছিলেন। অন্যদিকে অবাছাই খেলোয়াড় হিসেবে গ্রাসকোর্টে নেমেই বাজিমাত করেছেন চেক রিপাবলিকের মার্কেতা ভন্দ্রোসোভা। দুই হাত ভর্তি ট্যাটু নিয় কোর্টে নেমেছিলেন তিনি, সেই হাতে এবার মর্যাদাপূর্ণ উইম্বলডনের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি।
শনিবার (১৫ জুলাই) নারী এককের ফাইনালে সরাসরি সেটে বাজিমাত করেছেন ভন্দ্রোসোভা। প্রায় দেড় ঘণ্টা স্থায়ী ম্যাচটি জিতেছেন ৬-৪, ৬-৪ গেমে। ২০১৭ সালের পর থেকে মেয়েদের টেনিস নতুন নতুন বিজয়ী পেয়েছে। তবে এবারই প্রথম কোনো অবাছাই খেলোয়াড় শিরোপা জয়ের উৎসব করলেন।
এর আগে কখনও গ্রাস কোর্টের এই টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় রাউন্ডই পার হতে পারেননি চেক রিপাবলিকান ভন্দ্রোসোভা। র্যাংকিংয়ের ৪২ নম্বর এই তারকা শুরু থেকেই রীতিমতো সবাইকে চমক দিয়ে আসছিলেন। যা ট্রফি উঁচিয়ে ধরার মধ্য দিয়ে শেষ হলো। এর আগে ২০১৯ সালে একবারই ফরাসি ওপেনের ফাইনালে উঠেছিলেন ভন্দ্রোসোভা। তবে ২৪ বছর বয়সী এই তারকা ফাইনালে অ্যাশলি বার্টির বিপক্ষে কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেননি। এবার জিতলেন তাও সরাসরি সেটে।
অবাছাই হিসেবে আসরের শুরু থেকেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে মোট পাঁচজন বাছাই খেলোয়াড়কে হারিয়েছিলেন জাভেউর। টুর্নামেন্ট শুরুর সময় কি তার কল্পনাতেও ছিল এমন কিছু? ভন্দ্রোসোভার কথাতেই তা পরিষ্কার হয়ে গেল, ‘কী হচ্ছে, আমি বুঝতে পারছি না-অসাধারণ, অবিশ্বাস্য অনুভূতি।’ ট্রফি হাতে তিনি বললেন, ‘কাল আমার প্রথম বিবাহবার্ষিকী। তার আগে সবাইকে একসঙ্গে দেখে খুব ভাল লাগছে। আমার বোন কাঁদছে। ইচ্ছে রয়েছে সবাইকে নিয়ে একটু বিয়ার খেতে যাব। গত কয়েকটা সপ্তাহ একটানা খেলে বিধ্বস্ত।’
অন্যদিকে, টানা তিনটি ফাইনাল হারায় টেনিস বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই ‘চোকার’ তকমা দেওয়া শুরু করেছেন জাভেউরকে। প্রথম রাউন্ড থেকে তার আগ্রাসী খেলা দেখে আসছিলেন উইম্বলডনের দর্শকরা। যত ফাইনালের দিকে এগোচ্ছিলেন তিউনিস তারকা ততই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু ফাইনালে ভুল করার ধরন এবারও তিনি বদলাতে পারলেন না। ট্রফি নির্ধারণী ম্যাচে তার ‘আনফোর্সড এরর’-এর (অনিচ্ছাকৃত ভুল) সংখ্যা ৩১। যেখানে ভন্দ্রোসোভা মাত্র ১৩টি মেরেছেন। প্রথম আরব খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় এবং প্রথম আফ্রিকান নারী হিসেবে চার গ্র্যান্ড স্ল্যামের একটি ট্রফি উঁচিয়ে ধরার সুযোগ ছিল তার সামনে। তবে ৬ নম্বর র্যাংকিংধারী এই ২৮ বছর বয়সী তারকা তীরে গিয়ে আর পারলেন না।
ফাইনাল হারের কষ্ট যেন তার গলার কাছে দলা পাকিয়ে উঠছিল। তবু জাভেউর চেষ্টা করলেন কথা বলার, ‘এই পরিস্থিতিতে কথা বলা ভীষণ কঠিন। এটাই আমার জীবনের সব থেকে কষ্টের হার। ভন্দ্রোসোভাকে অভিনন্দন। একটা দারুণ প্রতিযোগিতা শেষ হল ওর জন্য। তুমি দুর্দান্ত খেলোয়াড়। আমি জানি তোমার বেশ কিছু চোট আঘাত আছে। তাও তুমি আজ চ্যাম্পিয়ন। কোর্টে আজ আমার একটা কঠিন দিন ছিল। আমি কিন্তু হাল ছাড়ছি না। আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসব। তোমাদের কথা দিচ্ছি, একদিন নিশ্চয়ই জিতব। প্রমিস।’
জেএন/এমআর