দেশের বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নকে ‘লুটেরা মডেল’অভিহিত করার দায়ে দুজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার।
গতকাল (১৯ জুলাই) তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এর আগে তাদেরকে গত রবি ও সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছিল।
প্রজ্ঞাপনে দেখা গেছে, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রাক্তন প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) এস এম হামিদুল হক এবং আইএমইডির পরিচালক (উপসচিব) মোহাম্মদ মাহিদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অসদাচরণের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিধিমালা অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা প্রয়োজন ও সমীচীন মনে করেন। সেজন্য এ বিধিমালার অনুযায়ী হামিদুল হক ও মাহিদুর রহমানকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালে তারা বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নকে ‘লুটেরা মডেল’ অভিহিত করে খাতটি ভারত ও চীনের ব্যবসায়ীদের জন্য অবাধ ক্ষেত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘ বিদ্যু সেক্টরভুক্ত প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতিবিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এটিকে ভালোভাবে নেয়নি সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ওই গবেষণা প্রতিবেদন তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আইএমইডির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এস এম হামিদুল হক এবং আইএমইডি’র পরিচালক মাহিদুর রহমান। ওই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তাদের দুজনকে জনপ্রশাসনে ওএসডি করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
জানা গেছে, বিদ্যুৎ খাতের প্রতিবেদন-সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখতে এক অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার আগেই কর্মকর্তাদের ওএসডি করা হয়। তবে ইতোমধ্যে সে প্রতিবেদন জমা পড়েছে। বিদ্যুৎ খাত-সংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য মূল দায়িত্ব ছিল পরিচালক মাহিদুর রহমানের; সেক্টর প্রধান ছিলেন হামিদুল হক।
আলোচ্য মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নকে ‘লুটেরা মডেল’ অভিহিত করে খাতটি ভারত ও চীনের ব্যবসায়ীদের জন্য অবাধ ক্ষেত্র উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এ খাতের বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বর্ধনকারী উদ্যোগের সমালোচনাও ছিল। তবে আরেকটি সূত্রের দাবি, বিদ্যুৎ খাত-সংক্রান্ত মূল্যায়ন প্রতিবেদনের অংশবিশেষ একটি পত্রিকার কলাম লেখকের লেখার অংশ ভুলক্রমে রয়ে গেছে এবং অসাবধানতাবশত সে অংশটি আইএমইডির ওয়েবসাইটে প্রকাশ হওয়ায় বিপত্তি ঘটে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এটি সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে।
জেএন/এমআর