সড়কে বাসচাপায় সহপাঠির মৃত্যু, রাজপথে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে উত্তাল রাজপথ। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে সমর্থনও দেয় দেশের সর্বস্তরের মানুষ। কিন্তু এক সপ্তাহের এ আন্দোলন এখন প্রশ্নের মুখে। উল্টো পথে মন্ত্রীর গাড়ি ফেরত পাঠিয়ে, লাইসসেন্সবিহীন গাড়ি আটকে যে শিক্ষার্থীরা আলোড়ন তুলেছিল তারাই এখন দিকনির্দেশনাহীন।
সচেতন মহলের মতে, আন্দোলনে ঘুণ ধরেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খল আন্দোলনে ঢুকে পড়েছে একটি চক্র। যারা শিক্ষার্থীদের কাঁধে ভর করে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সেকান্দার চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, কোমল শিশু-কিশোরদের আন্দোলন প্রথমে যৌক্তিক ছিল। সরকারের পক্ষ থেকেও দাবি আদায়ের প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দুষ্কৃতকারীরা দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। ওই মহলটি জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এবং অর্থনীতি অচল করে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। এমন কর্মসূচি আমরা চাই না।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা শুরু থেকে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাচ্ছিল। তাই প্রথমদিকে তাদের এ আন্দোলন দেশজুড়ে প্রশংসতি হচ্ছিল। এক পর্যায়ে সরকারও শিক্ষার্থীদের প্রতিশ্রুতি দেয় তাদের দেওয়া নয় দফা দাবি বাস্তবায়নের। কিন্তু এরপরও আন্দোলন চলতে থাকে এবং সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ক্রমেই সহিংস হতে থাকে।
অভিযোগ রয়েছে, চারদিন পর সর্বস্তরে সমর্থন পাওয়া আন্দোলনটির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বিএনপি-জামায়াত ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের নিয়ন্ত্রণে। পুলিশের ওপর হামলা, অশ্লিল ব্যানার, গাড়ি ভাংচুর ও শ্রমিকদের লাঞ্চিত করার অভিযোগও উঠে। এ অবস্থায় পরিবহন মালিকরাও অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে ডাক দেয়।
কয়েকটি কারণে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠে। বিশেষ করে আন্দোলনে উস্কানি দেওয়া আমীর খসরুর অডিও টেপ ভাইরাল এবং আজ (৫ আগস্ট) আন্দোলনে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে পাঁচ শিবির কর্মীকে নগরের জিইসি মোড় থেকে আটক করা হলে প্রশ্নবিদ্ধ হয় আন্দোলন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও কিছু বহিরাগত স্বার্থান্বেষী মহলের অনুপ্রবেশের মাধ্যমে দেশের চলমান স্থিতিশীল পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির। অপরদিকে আন্দোলনে বিরোধী অপশক্তির অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন চট্টগ্রাম মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড।