চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অজ্ঞাত বিষাক্ত পোকার কামড়ে সাজ্জাদুল ইসলাম সোহান (২৫) নামে এক সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (২৩ জুলাই) রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত সোহান মিরসরাই সদর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড মোটবাড়িয়া গ্রামের বশিরউল্লাহ মেস্ত্রী বাড়ির মিজানুল হকের ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোহান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। গত বছর ছুটিতে এসে আর ব্যারাকে ফিরে যান নাই। রবিবার দুপুরে বাড়ির রান্না ঘরে বসে ল্যাপটপে কাজ করছিলেন। এসময় বিষাক্ত কিছু একটা তার ডানপায়ের ঘোড়ালিতে দংশন করে।
দংশনের অনেকক্ষণ পর পা ঝিমঝিম করলে দেখা যায় দংশনের স্থানে একটি দাগ রয়েছে। কিন্তু সাপের দংশন না অন্যকিছু বুঝা না যাওয়ায় হাঁটুর নিছে শক্ত করে বেঁধে দেয়া হয়। অতঃপর সোহানকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
সেখানে তার বাহুর রক্ত পরীক্ষা করে কোন বিষের উপস্থিতি পাওয়া না গেলে পেইন কিলার ইজেকশন দেয়া হয়। ইনজেকশন দেয়ার পর কিছুটা সুস্থতা অনুভব হলে চিকিৎসক তার পায়ের বাঁধন খুলে দেন।
বাঁধন খুলে দেয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে সোহানের অবস্থার অবনতি হতে থাকলে পুনরায় রক্ত পরীক্ষা করে বিষাক্ত লালার নমুনা পাওয়া যায়। হাসপাতালের চিকিৎসক বিষাক্ত সাপে কাটা ধারণা করে এন্টিবোমেন ইনজেকশন পুশ করে।
ইনজেকশন দেয়ার সাথে সাথে সোহানের অবস্থার চরম অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। মেডিকেলে যাওয়ার পথে রাত ৮টায় তার মৃত্যু হয়।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মিনহাজুর রহমান জানান, সোহানকে দুপুর ১টার দিকে দংশন করা হলেও তাকে হাসপাতালে ৩টার দিকে আনা হয়। এছাড়া তাকে কিসে দংশন করেছে সেটি বলতে না পারায় লক্ষণ নিশ্চিত না হয়ে এন্টিবোমেন দেয়া সম্ভব হয়নি।
প্রথমে আমরা হেমাটোলজি টেষ্ট করে সেখানে বিষাক্ত টক্সিটের অনুপস্থিতি পাইনি। পরবর্তীতে নিয়োরোলজিক্যাল টেষ্টে বিষের অস্তিত্ব পাই। সাধারণত কিং কোবরা ও দাড়াইশ জাতিয় সাপের দংশনে নিয়োরো এটার্ক হয়।
তাছাড়া অন্যান্ন সিম্পডম বিষাক্ত সাপের দংশনের সাথে মিল পাওয়ায় আমরা এন্টিবোমেন এপ্লাই করি এবং আইসিইউ সার্পোটের জন্য চমেকে রেফার করি। কিন্তু পথেই রোগীর মৃত্যু হয়। মৃত্যু আশংঙ্কা সম্পর্কে পরিবারের সদস্যদের সতর্ক করা হয়েছিল।
ডাক্তার মিনহাজ জানান, সাপে দংশন বা বিষাক্ত পোকার কামড়ে কোন প্রকার হাতে পায়ে বাঁধন দেয়া ঠিক নয়। এতে চিকিৎসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
জেএন/পিআর