দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন।
বুধবার (২ আগস্ট) এ বিষয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে লিখিতভাবে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সম্রাটের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরী বিষয়টি আদালতকে জানান।
লিখিতভাবে তিনি জানান, গত ১৫ জুলাই মেডিকেল চেকআপের জন্য সম্রাট কলকাতায় যান। চিকিৎসা শেষে ২৪ জুলাই তিনি দেশে ফিরে এসেছেন।
এর আগে গত ১৬ জুলাই জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার আসামি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট চিকিৎসার জন্য বিদেশে চলে যাওয়ার তথ্য আদালতকে জানানো হয়।
গত ১৩ জুলাই জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার আসামি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতির আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে দুদক।
এর আগে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার আসামি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেন আদালত। একইসঙ্গে আদালত সম্রাটের পাসপোর্ট তার জিম্মায় দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম এই আদেশ দেন।
ওইদিন আইনজীবী আফরোজা বলেছিলেন, তার মক্কেল (সম্রাট) কিডনিসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আগেই আবেদন করেছিলেন তিনি। একইসঙ্গে পাসপোর্ট তার জিম্মায় দেওয়ার অনুমতি চাওয়া হয় আদালতের কাছে। শুনানি নিয়ে আদালত আদেশ দিয়েছেন।
আইনজীবী আফরোজা আরও বলেন, সম্রাটের পাসপোর্ট তার জিম্মায় দেওয়ার আদেশ হয়েছে। তবে আদালত শর্ত দিয়েছেন, পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পর চিকিৎসার জন্য সম্রাট এক মাস বিদেশে অবস্থান করতে পারবেন। আর তিনি তার পাসপোর্ট সর্বোচ্চ দুই মাস নিজের জিম্মায় রাখতে পারবেন। পরে তাকে তার পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় তার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে তার বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
এছাড়া অভিযোগপত্রে ২১৯ কোটি ৪৮ লাখ ৫৮ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়। এতে বলা হয়, এ টাকা তিনি পাচার করেছেন। গত বছরের ২২ মার্চ অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। তখন র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গ্রেফতারের সময় সম্রাট ও আরমান মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তাদের কাছে বিদেশি মদ ছিল। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
গ্রেফতারের পর সম্রাট ও আরমানকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আনা হয়। পরে সম্রাটকে নিয়ে তার কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। সেখানে বন্যপ্রাণীর চামড়া, মাদক ও অস্ত্র পাওয়ার কথা বলা হয়। বন্যপ্রাণীর চামড়া রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
জেএন/এমআর