চট্টগ্রামের রাউজানে খালে নৌকোডুবির ঘটনায় নিখোঁজ হওয়ার ৩২ ঘন্টা পর হালদা নদীর চায়াটর এলাকা থেকে শাহেদ হোসেন বাবু (৩৭) নামের এক তরুণ উদ্যোক্তার লাশ উদ্ধার হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন লাশটি ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে।
স্থানীয় সংগঠক মহিউদ্দিন ইমন ও মহিউদ্দিন চৌধুরী জানান, নিখোঁজের পর থেকে গত ৩২ ঘন্টার নৌ পুলিশ, রাউজান ও হাটহাজারী থানা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, ডুবুরি দলসহ স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ উদ্ধার তখপরতা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
সর্বশেষ ৮ আগস্ট মঙ্গলবার ডুবুরি দল ঘটনাস্থলের আশপাশের তার লাশের হদিস না পেয়ে নৌকাযোগে হালদা নদীর বিভিন্ন স্পটে লাশের সন্ধানে অভিযানে নামে।
৯ আগস্ট বুধবার ভোররাত চারটার দিকে নদীতে ভাসমান অবস্থায় লাশটি দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।
গত ৭ আগস্ট সোমবার রাত আনুমানিক আটটার দিকে বন্যার পানিতে নিজের গরু এবং মৎস্য খামারের ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করে নৌকা নিয়ে পশ্চিম বারিঘোনা হালদা নদীর শাখা খাল দিয়ে ফেরার পথে বাড়িঘোনা ব্রীজের সাথে ধাক্কা লেগে নৌকা উল্টে যায়।
এ সময় শাহেদের সাথে থাকা তিনজন সাঁতার কেটে কুলে আসতে পারলেও শাহেদ ভাটার পানির স্রোতে ভেসে যায়। তাকে উদ্ধারে রাতভর উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে নৌ পুলিশ, রাউজান ও হাটহাজারী থানা প্রশাসন ও স্থানীয় লোকজন। ৮ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেন ডুবুরি দল।
নিহত শাহেদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ৯ আগস্ট বুধবার ময়নাতদন্ত শেষে বাদে আছর নিজ গ্রাম উরকিরচরে নিহত শাহেদের নামাজে জানাজা শেষে তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হবে। বিবাহিত জীবনে সে এক পুত্র সন্তানের জনক। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, পিতা আলহাজ্ব এস এম ইউসুফ এলাকার গরীব, দু:খী ও অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য আমৃত্যু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, এছাড়া মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, সামাজিক সংগঠন ছাড়াও এলাকার উন্নয়নে তিনি ব্যাপক অবদান রেখেছেন।
বাবার মৃত্যুর পর সন্তান শাহেদ হোসেন বাবু সমাজহিতকর কাজে সম্পৃক্ত হন। বাবার দেখাদেখি সামাজিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত থাকায় শাহেদ এলাকার সর্বস্থরের মানুষের মন জয় করে নেন।
তার এমন মৃত্যু শোকে নিজ গ্রাম ছাড়াও অসংখ্য মানুষ সামাজিক যোগাযোগে স্ট্যাটাস দিয়ে শাহেদের প্রতি নিবিড় ভালোবাসার কথা তুলে ধরেন।
শাহেদের অকাল মৃত্যু গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ, স্থানীয় চেয়ারম্যান সৈয়দ আবদুল জাব্বার সোহেল।
জেএন/এমআর