ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার পর তাদের হাতে থাকা শেয়ারও বিক্রি করে দিচ্ছে সৌদি আরবের কোম্পানি আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিস্ট এজেন্সি।
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকের সাথে সাক্ষাৎকালে আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিস্ট এজেন্সির হাতে থাকা ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করার পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা।
নানা কারণে ব্যাংকটি এখন তারল্যসংকটে ভুগছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাহিদামতো নগদ জমা (সিআরআর) রাখতে পারছে না। এ জন্য প্রতিনিয়ত ব্যাংকটির জরিমানা হচ্ছে। আবার চেক ক্লিয়ারিং ও অনলাইনে টাকা স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত হিসাবেও চাহিদামতো টাকা রাখছে না। এ অবস্থায় মাঝেমধ্যে টাকা ধার দিয়ে ব্যাংকটির লেনদেন কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে ইসলামী ব্যাংকের পুরো শেয়ার ছেড়ে দিয়ে পরিচালনা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল সরকারি প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। তারও আগে বেশ কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠান এ ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করে দেয়।
চলতি সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পাঠানো ইসলামী ব্যাংকের এক চিঠিতে বলা হয়, সৌদি আরবভিত্তিক কোম্পানি আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিস্ট এজেন্সি গত ৫ জুলাই একটি চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছে যে তারা ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পদে থাকবে না। এরপর ২৬ জুলাই পরিচালনা পর্ষদের সভায় তা অনুমোদিত হয়। আরবসাসের পক্ষে মুসাইদ আবদুল্লাহ এ আল-রাজি দীর্ঘদিন ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ইসলামী ব্যাংকের ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক আরবসাস ট্রাভেলস। তবে কেন আরবসাস ট্রাভেলস পরিচালক পদ ছেড়ে দিল, সে বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের চিঠিতে কিছু বলা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ব্যাংকের এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান যে আরবসাস ট্রাভেলস পরিচালক পদ ছাড়ার পাশাপাশি তাদের হাতে থাকা শেয়ারও বিক্রি করে দিচ্ছে।
মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন, ‘ভালো মুনাফা পাওয়ায় সৌদি কোম্পানিটি শেয়ার ছেড়ে দিচ্ছে। ৪০ বছর ধরে তারা আমাদের সঙ্গে ছিল। তাদের উদ্দেশ্য ইসলামি ধারার ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা। যেসব দেশে ইসলামি ব্যাংক নেই, তারা সেসব দেশে যাবে।’
যখন শেয়ারের দাম আরও চাঙা ছিল, তখন না ছেড়ে এখন ছাড়ছে কেন, এমন প্রশ্ন করা হলে মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন, ‘তারা ৪০ বছর ধরে মুনাফা পেয়েছে। তারা শেয়ার ছাড়ায় ভালো হয়েছে। দেশের কোম্পানিগুলো তা কিনতে পারছে। এটা দেশীয় সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।’
জেএন/এমআর