ডাবের ডাবল সেঞ্চুরি

ডেঙ্গুর কারণে অস্বাভাবিক বেড়েছে ডাবের দাম। ১৪০ টাকার নিচে বাজারে কোনো ডাব নেই। এ দামে যেগুলো মিলছে, সেগুলো ছোট-মাঝারি আকারের। আর বড় সাইজের একেকটি ডাবের দাম ২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।

- Advertisement -

বিক্রেতারা বলছেন, এমনিতে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে ডাবের ফলন কম থাকে। এরমধ্যে চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে। এসময় কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে পিচ্ছিল গাছে উঠে ডাব পাড়া কমেছে। এ কারণে বাজারে আরও কমে গেছে সরবরাহ। সবমিলে এমন ঊর্ধ্বগতি।

- Advertisement -google news follower

মগবাজারের বিক্রেতা সুমন মিয়া বলেন, এই ডেঙ্গু ডাবের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতি বছর এসময় ডাবের দাম সবচেয়ে বেশি থাকে। বিশেষ করে এ সময় ডেঙ্গুর প্রকোপ হয়। সেজন্য চাহিদা বাড়ে।

তিনি বলেন, ডাব সরবরাহকারী কয়েকটি জেলায় টানা বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে সেখানে গাছ থেকে ডাব নামানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই সরবরাহ আরও কমেছে, যেখানে চাহিদা কয়েকগুণ বেশি।

- Advertisement -islamibank

এদিকে রোগের প্রকোপ বাড়ায় রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল এলাকায় দেখা গেছে, সেখানেও আগের চেয়ে ১০-২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে প্রাকৃতিক এ পানীয়।

আগারগাঁওয়ে শিশু হাসপাতাল এলাকায় রাস্তার পাশে ডাব বিক্রি করছিলেন এক বৃদ্ধ। তিনি তার ভ্যানে থাকা ছোট আকারের একেকটি ডাবের দাম চাইলেন ১৩০ টাকা করে। মাঝারি আকারের ডাবের দাম চাইলেন ১৫০ টাকা আর সবচেয়ে বড় আকারের ডাবের দাম চাইলেন ২০০ টাকা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকায় গিয়েও ডাবের একই রকম দাম দেখা গেছে।

গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেটের চারদিকে প্রায় ১০ থেকে ১২টি ডাবের দোকান রয়েছে। সেখানে ১২০ টাকার নিচে কোনো ডাব পাওয়া যায়নি মঙ্গলবার। তবে এখানে ডাবের দাম হাসপাতালগুলোর সামনের দোকান থেকে ২০-৩০ টাকা কম দেখা গেছে।

অন্যদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি ও খুচরা ডাবের বাজার। সেখানেও ডাবের দাম বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কমবেশি ডাব আসলেও সেগুলো বেশি দামে কেনাবেচা হচ্ছে।

সেখানে আড়তদাররা জানান, বরিশাল, ভোলা, বাগেরহাট, নোয়াখালী, ফরিদপুর, যশোর ও ময়মনসিংহ থেকে ডাব আসছে। কিন্তু আঞ্চলিক ওই বাজারগুলোতেই দাম বেশি। গত দুই সপ্তাহে পাইকারিতে ডাবের দাম ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

পাইকারি বিক্রেতা খালেক হোসেন বলেন, এখানে শ হিসেবে ডাব বিক্রি হয়। বড় সাইজের প্রতি একশ ডাব পাইকারি ১২ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এত দাম আগে কখনো ছিল না। কিছুদিন আগেই দুই-তিন হাজার কম ছিল।

ওই বাজারে মাঝারি সাইজের প্রতি একশ ডাব ৯ হাজার থেকে ১২ হাজার এবং ছোট সাইজের ডাব ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এসব ডাব বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর খুচরা বিক্রেতার কাছে।

ডাবের পাইকারি বিক্রেতা সুমন সরকার বলেন, এখন চাহিদা তুঙ্গে। বছরের এসময় নানান ধরনের জ্বর ও অন্যান্য রোগের প্রকোপের কারণে দাম বাড়ে। প্রতি বছর এখন এসময়টাতে চড়া দাম থাকে।

প্রতিদিন ডাবের পানি পান করেন এমন একজন আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, বড় সাইজের একটি ডাব তিন চার বছর আগে ৫০ টাকা ছিল। এরমধ্যে প্রায় তিনগুণ দাম বেড়েছে। অসুখের কারণে আমার মতো যাদের প্রতিদিন ডাব খেতে হচ্ছে তারা খুব অসুবিধায় আছি। এখন সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে সবকিছু।

এদিকে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) হিসাবে, ২০০৯ সালে ঢাকায় একটি ডাবের দাম ছিল ২২ টাকার মতো। সেটা ২০২০ সালে গড়ে ৭৪ টাকায় বিক্রি হয়। বর্তমানে গড় দাম ১০০ টাকার নিচে হবে না।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM