দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর চিকিৎসক এস এম মোস্তফা জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে তাফসিরুল ইসলামকে (২৩) ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত রাতে ঝিনাইদহের মহেশপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারকারী এবং সাঈদীকে চিকিৎসা দেওয়া ডা. মোস্তফা জামানকে হত্যার হুমকিদাতা তাফসিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাফসিরুল সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারসহ চিকিৎসক মোস্তফা জামানকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মোবাইলে ম্যাসেজ দিয়ে হত্যার হুমকি প্রদানের ব্যাপারে তথ্য প্রদান করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তফসিরুল স্থানীয় একটি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখা করছেন। তিনি স্কুলজীবন থেকেই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন সক্রিয় সদস্য। তাফসিরুল আইটিতে দক্ষ হওয়ায় অনলাইনে ইমেইল মার্কেটিংয়ের কাজ করে মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় করতেন।
তাফসিরুল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারিয়াপুর, মহেশপুর#তাফসিরুল ইসলাম’ ও ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারিয়াপুর, মহেশপুর@তাফসিরুল ইসলাম’ নামে দুটি ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিন হিসেবে পরিচালনা করে। মূলত সে দলীয় ও রাজনৈতিক মতাদর্শ, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রোশ থেকে মোস্তাফা জামানের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর বিভিন্ন মাধ্যমে খুঁজে বের করে হোয়াটসঅ্যাপে হুমকি দেন।
সেখানে তিনি লিখেন, এই খুনি বাইরে আয় তোকে এবং তোর পরিবারের সব সদস্যকে হত্যা করে আমি আমার জীবনের লক্ষ্য পূরণ করব, 9 mm কিনে রেখেছি। একই সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে ম্যাসেজ দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে।
এসব ঘটনার পর ভুক্তভোগী চিকিৎসক মোস্তফা জামান থানায় সাধারণ ডায়েরি করলে গ্রেপ্তার তাফসিরুল উক্ত মেসেজ শুধু হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মুছে ফেলে। কিন্তু তার মোবাইলে উল্লিখিত হত্যার হুমকিসংবলিত মেসেজের স্ক্রিনশট পাওয়া যায়।
র্যাব আরও জানায়, সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটি চক্র অপপ্রচার করার চেষ্টা করছে এবং একই সঙ্গে যারা জামায়াত নেতা সাঈদীর চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের হুমকি, হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে।
র্যাব জানায়, বিশেষজ্ঞ একদল চিকিৎসক আন্তর্জাতিক প্র্যাকটিস অনুসরণ করে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসা করেন সাঈদীর। এ ছাড়াও তার পরিবারও তার চিকিৎসার ব্যাপারে চিকিৎসকদের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বলে জানা যায়।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গত ১৩ আগস্ট অসুস্থ হওয়ায় তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে গত ১৪ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা যান।
জেএন/এমআর