সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেলের পরিচয় দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের নানাভাবে বিভ্রান্তি ও প্রতারণার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২০ আগস্ট) রাতে নগরীর বন্দর থানার কলসিদীঘির ধুমপাড়া সাগরপাড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো.হারিফ মিয়া (২৩), মো.ইয়ার হোসেন (৪২),মো.মিলন খান (৩০) ও মো.ইউসুফ মিয়া (৪০)।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ১৭টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে প্রতারক চক্রটির দলনেতা হারিফ মিয়া।
সে নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল এবং তার অন্য সদস্যরা তার আপন ভাই পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও পুলিশ সদস্যদের বিভ্রান্তি করে আসছিল।
সেনাবাহিনীর নাম পরিচয় ব্যবহার করে থানার উপ-পরিদর্শক পদের পুলিশ সদস্যদের কল দিয়ে বিব্রত করে অনৈতিক কাজ করার তদবির করা এবং কর্মকর্তাদের আত্মীয়-স্বজন পরিচয় দিয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে টাকা আত্মসাৎ করার কাজে তারা বিভিন্ন কোম্পানির সিম কার্ড ব্যবহার করত।
তাছাড়া প্রতারণার কাজে ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের একটি ভিজিটিং কার্ডও ব্যবহার করত চক্রটি। বন্দর থানা এলাকায় পুলিশের একটি পেট্রোল টিম অভিযানে গেল কার্ডটি পাই। এতে সন্দেহ হলে যাচাই বাচাই করে অভিযান চালিয়ে ভুয়া ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেলসহ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা জানান, কলসীদীঘি এলাকার সাগরপাড়ে একজন বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে ভাড়া নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছিল। আশেপাশের লোকজন ৯৯৯ এ কল দিলে পেট্রোল টিম অভিযানে যায়।
বাড়ির ইনচার্জ মিলন খান আমাদের পুলিশ অফিসারকে এসে মোবাইল দিয়ে বলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল স্যার এসে কথা বলবে। আপনি একটু কথা বলেন।
তখন পুলিশের ওই সদস্য সম্মানের সঙ্গে মোবাইলের অন্যপাশে থাকা ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে ওপাশ থেকে বলে-যে মোবাইল ধরিয়ে দিয়েছে সে আপনাকে বলেনি আমি কে, আপনি আবার আমার নাম জিজ্ঞেস করছেন, আপনি ওখানে কেন গেছেন? পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণকে বলব, আপনার বাড়ি কোথায়। তখন ওই এসআই তার বাড়ি ফেনী বললে মোবাইলের ওপাশে থাকা ব্যক্তি বলে ফেনীর এসপিকে আপনার বাড়িতে পাঠাব?
বিব্রত পুলিশ সদস্য কল কেটে ওসিকে বিষয়টি জানান। ওসি সঞ্জয় বলেন, ‘সেনাবাহিনীর একজন প্রধান ব্যক্তি পুলিশের এক এসআইকে কল দিয়ে এভাবে তদবির করবে বা হুমকি দেবে সেটা আমাদের কোনোমতেই বোধগম্য হচ্ছিল না।
পরে আমি ওই নম্বর সংগ্রহ করে আমাদের একটি গ্রুপে দিয়ে অন্যন্য অফিসারদেরকে সতর্ক থাকতে বলি। তখন অনেকে আমাকে জানায় অনেকদিন ধরে তাদেরকে ‘আমি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শফিকুল আলম বলছি’ পরিচয় দিয়ে কোনো কাজে গেলে কল দিয়ে বিভ্রান্ত করে।
এরপর আমার পরিচিত এক সেনাবাহিনীর মেজরের সঙ্গে আমি কথা বললাম এবং তাকে ওই ভিজিটিং কার্ড পাঠিয়ে সেটা যাচাই করতে অনুরোধ করলাম। পরে তিনি বললেন কার্ডটি ভুয়া। বিগ্রেডিয়ার জেনারেল পরিচয়ে যে মোবাইল নম্বর থেকে কল দেওয়া হয়, সেটা সিমটা গ্রেফতার মো.হারিফ মিয়ার নামে রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। এরপর আমরা অভিযান চালিয়ে হারিফ মিয়াসহ এই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করি।
জেএন/পিআর