চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত নির্মাণাধীন চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নাম হবে সাবেক সিটি মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে। ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এ উড়ালসেতুর নাম দেওয়া হবে মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফ্লাইওভার। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ প্রায় শেষপর্যায়ে আছে। অক্টোবরে এটি উদ্বোধনের কথা আছে। এছাড়া বায়েজিদ-ফৌজদারহাট মঙ্গমাতা সড়ক এবং বাকলিয়া এক্সেস রোডটি জানে আলম দোভাষ সড়ক নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ৪৫৮ তম বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস। তিনি বলেন, ‘এ মেগা প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। আজকের বোর্ডসভায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নামকরণের বিষয়টি সর্বসম্মতিক্রমে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফ্লাইওভার নামে অনুমোদন হয়েছে। ‘
নগরের লালখান বাজার থেকে শুরু হয়ে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংযোগ সড়ক পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মিত হচ্ছে। র্যাম্প ও লুপ মিলে উড়াল সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য হবে ২০ কিলোমিটার। চার লেনের এই এক্সপ্রেসওয়ের ৫৪ ফুট প্রস্থ রয়েছে। ৯টি এলাকায় ২৪টি র্যাম্প (গাড়ি ওঠানামার পথ) থাকবে। নগরের টাইগারপাস মোড়ে চারটি, আগ্রাবাদ মোড়ে চারটি, বারিক বিল্ডিং মোড়ে দুটি, নিমতলী মোড়ে দুটি, কাস্টমস মোড়ে দুটি, সিইপিজেড মোড়ে চারটি, কর্ণফুলী ইপিজেডের সামনে দুটি, কাঠগড়ে দুটি এবং পতেঙ্গা সৈকত এলাকায় দুটি র্যাম্প থাকবে। এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মিত হলে চট্টগ্রামের শিল্প-বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। যৌথভাবে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ পায় বাংলাদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ও চীনা প্রতিষ্ঠান র্যাঙ্কিন। প্রকল্পটির চুক্তিমূল্য ছিল তিন হাজার ৭২০ কোটি ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৭২৮ টাকা। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন। সবশেষ সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ও সময় বাড়ানো হয়। সংশোধিত ব্যয় অনুযায়ী আরও ৬৪৯ কোটি দুই লাখ ৪৩ হাজার ৯১ টাকা বৃদ্ধির ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন দেয় সরকার। এতে ব্যয় বেড়ে এখন প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে চার হাজার ৩৬৯ কোটি সাত লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকা। মেয়াদও বেড়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রকল্পের ৮০ শতাংশের বেশি কাজ শেষ হয়েছে। ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে বিমানবন্দর থেকে নিমতলা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার কাজ শেষ। নিমতলা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত বাকি ৬ কিলোমিটারের মধ্যে এখন রেলিং-পাইলিং ও ঢালাইয়ের কাজ চলছে।
সিডিএ’র বোর্ড সদস্য জিনাত সোহানা চৌধুরী বলেন, ‘অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। এসময়ের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন চট্টগ্রামে আসবেন, তখনই সেটি উদ্বোধন করবেন।’
প্রসঙ্গত, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তিনবারের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি ছিলেন।
জেএন/এমআর