অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা হাসপাতালে এক নারীর মস্তিষ্ক অস্ত্রোপচারে ৮ সেন্টিমিটার দীর্ঘ একটি গোলকৃমি জীবন্ত অবস্থায় বের করেছেন নিউরোসার্জন ডা. হরি প্রিয়া বান্দী।
হাসপাতালটির সংক্রামক রোগের চিকিত্সক ডা. সঞ্জয় সেনানায়েক এই ঘটনার কথা জানিয়েছেন। মানুষের মস্তিষ্কে জীবিত কৃমি পাওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। এই কৃমি সাধারণত অজগর সাপে পাওয়া যায়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
হাসপাতালের নিউরোসার্জন ডা. হরি প্রিয়া বান্দি বলেন, রোগীর মস্তিষ্ক থেকে ৮ সেমি দীর্ঘ একটি পরজীবী বের করা হয়েছে। কৃমিটি এখনও বেঁচে আছে ও নড়াচড়া করছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬৪ বছরের ওই নারী নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দা। তিনি ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস প্রথমবার স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি হন ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, শুকনো কাশি, জ্বর এবং রাতের বেলায় ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার মতো উপসর্গ নিয়ে। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁর আসল রোগ নির্ণয় করতে পারেননি।
বছরখানেকের মধ্যে তাঁর এসব উপসর্গ আরও তীব্র হয় এবং তিনি হতাশা ও ভুলে যাওয়ার মতো উপসর্গে ভুগতে থাকেন। পরে স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে ক্যানবেরা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। পরে তাঁর মস্তিষ্কের এমআরআই করার পর দেখা যায় সেখানে কিছু অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যার জন্য সার্জারি প্রয়োজন।
কিন্তু বিষয়টি সহজ ছিল না, কারণ সেখানে আসলে কী হচ্ছে তা নিউরোসার্জনদের জানা ছিল না। এ বিষয়ে ডা. সেনানায়েকে বলেন, ‘নিউরোসার্জনেরা নিশ্চয় এমনটা ভেবে অস্ত্রোপচার করেননি যে, তাঁরা সেখানে একটি জীবন্ত কৃমি খুঁজে পাবেন। সাধারণত নিউরোসার্জনেরা মস্তিষ্কের সংক্রমণ নিয়ে কাজ করেন, কিন্তু এই প্রথম বোধ হয় এমন কোনো ঘটনা ঘটল। কেউই এমনটা প্রত্যাশা করেননি।
এদিকে, আশ্চর্য এই ঘটনার পরপরই বিজ্ঞানীরা গোলকৃমিটি কোন প্রজাতির এবং রোগিণীর আরও নতুন কোনো চিকিৎসা প্রয়োজন কি না, বিষয়টি নির্ধারণ করতে একটি কমিটি গঠন করেছেন।
এ বিষয়ে ডা. সেনানায়েকে বলেন, ‘আমরা ঘটনার পরপরই ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করি যে, কোন ধরনে গোলকৃমি মস্তিষ্কে আক্রমণ করে সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে।’ কিন্তু বইপত্রে এমন কোনো গোলকৃমির সন্ধান পাওয়া যায়নি।
জেএন/পিআর