নেপালকে ২৩৮ রানে হারিয়ে পাকিস্তানের শুভ সূচনা

প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল নেপাল। প্রথম ম্যাচে তারা শক্তিশালী পাকিস্তানের মোকাবিলায় বোলিংয়ে শুরুটা ভালোই করেছিল। এরপর পাক অধিনায়ক বাবর আজম ও ইফতিখার আহমেদের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে তারা সাড়ে তিনশ ছোঁয়া পাহাড়সম রানের নিচে চাপা পড়ে। সেই চাপ সামলাতে পারেননি নেপালের ব্যাটাররা। ২৩.৪ ওভারে মাত্র ১০৪ রানেই গুটিয়ে গেছে রোহিত পৌডেলের দল। শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে পাকিস্তান পেয়েছে ২৩৮ রানের বড় জয়।

- Advertisement -

শুরুতে ব্যাট করে পাকিস্তান ৩৪৩ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য দাঁড় করায়। যদিও শুরুতে দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান কিছুটা চাপে ছিল। এরপর সেই চাপ সামলে বাবর আজম ও ইফতিখার আহমেদ খেলেন দুই শতকের ইনিংস। বাবর যা পরবর্তীতে দেড়শ’র ঘরে নিয়ে যান।

- Advertisement -google news follower

পাহাড়সম লক্ষ্যের সামনে শুরু থেকেই দিশেহারা ছিল নেপাল। প্রথম দুই ওভারেই তারা তিন উইকেট হারিয়ে বসে। এর মধ্যে শাহিন শাহ আফ্রিদি দুটি এবং নাসিম শাহ নেন এক উইকেট। তবে সেখান থেকে ৬০ রানের জুটি গড়ে পাল্টা লড়াইয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন আরিফ শেখ ও সোমপাল কামি। কিন্তু তাদের ‍বিদায়ের পর আর কেউ সেভাবে পাকিস্তানি বোলারদের সামনে দৃঢ়তা দেখাতে পারেননি।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৩.৪ ওভারেই গুটিয়ে যায় মহাদেশের ‘খর্বকায়’ দলটি। নেপালের হয়ে সর্বোচ্চ ২৮ রান করেছেন সোমপাল, এছাড়া আরিফ ২৬ এবং গুলশান ঝা করেন ১৩ রান।

- Advertisement -islamibank

পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন শাদাব খান। এছাড়া দুটি করে শিকার করেছেন শাহিন আফ্রিদি ও হারিস রউফ।

এর আগে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী দিনেই মুলতানে নেপালের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে পাকিস্তান। শেষ ৬০ বলে তারা তুলেছে ১২৯ রান। অথচ প্রথম ২২ ওভারে বাবরের দল কোনো রকমে একশ পেরিয়েছিল। এরপর পাকিস্তান নির্ধারিত ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে তুলল ৩৪২ রান। তাও চার উইকেট হাতে রেখে। ঘরের মাঠ মুলতানে রীতিমতো ঝড় তুললেন দুই পাকিস্তানি ব্যাটার বাবর আজম ও ইফতিখার আহমেদ।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দিনটা রাঙাতে পারেননি পাকিস্তানের ওপেনার ফখর জামান। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে এই উদ্বোধনী ব্যাটার কারান এলসির বল ঠিকভাবে খেলতে পারেননি। ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় উইকেটের পেছনে। ঝাঁপিয়ে পড়ে দু’হাতে ক্যাচ তালুবন্দী করেন নেপালের উইকেটরক্ষক আসিফ শেখ। সাজঘরে ফেরার আগে ২০ বলে ১৪ রান করেন ফখর।

ফখরের পর দুর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার আরেক তারকা ব্যাটার ইমাম-উল-হক। সোমপাল কামির ফুলার লেন্থের বল মিডঅফে ঠেলে দেন ইমাম। অনায়াসে সিঙ্গেল নেওয়া যায়। কে জানতো ফিল্ডিং প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা রোহিত কুমারের সরাসরি থ্রোয়িং স্ট্যাম্পে গিয়ে আঘাত হানবে! অপ্রত্যাশিত রানআউটে কিছুক্ষণ যেন থ বনে গেলেন ইমাম। আউট হওয়ার আগে ১৪ বলে ৫ রান করেন তিনি।

প্রথমবার এশিয়া কাপ খেলতে নামা নেপাল তখন পাকিস্তানকে রীতিমতো চেপে ধরে। স্কোরবোর্ডে ২৫ রান যোগ করতেই দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। আরেকটু পরিষ্কার করে বলতে গেলে ৫ বলের ব্যবধানে ২ উইকেট তুলে নেয় নেপাল। দ্রুত দুই উইকেট পতনের পর অভিজ্ঞ দুই ব্যাটার বাবর আজম ও রিজওয়ানের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। ২২তম ওভারে তাদের ব্যাটে ভর করেই দলীয় একশ পেরোয় স্বাগতিকরা। দুজনই ছিলেন ব্যক্তিগত অর্ধশতকের দ্বারপ্রান্তে। কিন্তু তারপরই আবার বিপদ!

ইমাম উল হকের পর দিনের দ্বিতীয় রানআউটের শিকার উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া রিজওয়ান। সন্দ্বীপ লামিচানের বল কাভারে ঠেলেই সিঙ্গেল নিতে চেয়েছিলেন। প্রান্ত বদল পূর্ণ করার আগেই দিপেন্দ্রা সিং আইরের থ্রোয়িং থেকে ননস্ট্রাইকিং প্রান্তের স্ট্যাম্প ততক্ষণে উড়ে গেছে। ৫০ বলে ৪৪ করেছেন রিজওয়ান।

রিজওয়ানের পর নামলেন আর উঠলেন তরুণ ব্যাটার আগা সালমান। লামিচানের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়েছিলেন পাক এই ব্যাটার। ঠিকঠাক খেলতে পারেননি। কুশাল ভুরটেলের হাতে ধরা পড়ে ১৪ বলে মাত্র ৫ রান করে ফিরে গেছেন তিনি।

এরপরের গল্পটা কেবল ‘পাকিস্তানি শো’। ম্যান ইন গ্রিনরা কেন নাম্বার ওয়ান সেটি যেন আরেকবার দেখিয়ে দিলেন। একপ্রান্তে বাবর আর অন্যপ্রান্তে ইফতিখারের ধারালো ব্যাটের সামনে যেন কোনো জবাবই ছিল নেপালি বোলারদের। ৪২ তম ওভারে আইরের বল ডিপ পয়েন্টে ঠেলে দিয়েই ২ রান পূর্ণ করলেন বাবর। আর তাতে পূর্ণ হলো সেঞ্চুরিও। ১০৯ বলে ১০০!

পাকিস্তানি অধিনায়ক ক্যারিয়ারের ১৯তম সেঞ্চুরি হাঁকালেন নেপালের বিপক্ষে। সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে সর্বাধিক সেঞ্চুরির রেকর্ডও এটি। ক্যারিয়ারের ১৯তম সেঞ্চুরি পেতে বাবর খেলেন মোটে ১০২ ইনিংস। শেষ পর্যন্ত তিনি আউট হয়ে গেলেও ১৪ চার ও ৪ ছক্কায় ১৩১ বলে ১৫১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দিয়েছেন।

অন্য প্রান্তে ইফতিখার আহমেদও ক্যারিয়ারের প্রথম ওডিআই সেঞ্চুরির আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন। ৭১ বলে ১০৯ রানে অপরাজিত ছিলেন পাক মিডলঅর্ডার এই ব্যাটার।

নেপালের হয়ে সোমপাল কামি দুটি এবং কারান এলসি ও সন্দ্বীপ লামিচানে একটি করে উইকেট পেয়েছেন।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM