চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। আমাদের মোট জনসংখ্যার ৬২ শতাংশ কর্মক্ষম। ১৮ বছরের অধিক বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনা সম্ভব হলে তারা একটি সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতাভূক্ত হবেন। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা কার্যকর হলে ধীরে ধীরে আমাদের জীবনমাত্রার মান উন্নত হবে। পাশাপাশি মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাবে, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা হ্রাস পাবে এবং বয়স্ক জনসাধারণের সামাজিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে।
আজ ৩১ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্তৃক নগরীর আইস ফ্যাক্টরী রোডস্থ পিটিআই মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সর্বজনীন পেনশন স্কীমের কার্যকর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জেলা পর্যায়ের অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মূখ্য আলোচক ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব (প্রবিধি-১) মনির হোসেন চৌধুরী।
অবহিতকরণ সভায় জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, গণমাধ্যমকর্মী, পরিবহণ শ্রমিক, এনজিও কর্মী, ইমাম, পুরোহিত, তৃতীয় লিঙ্গ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ প্রায় ৫ শতাধিক লোক অংশ নেন। সর্বস্তরের জনগণকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনয়নের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে চালুকৃত সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম সর্ব সাধারণকে অবহিত করার লক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব (প্রবিধি-১) মনির হোসেন চৌধুরী বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের সুনির্দিষ্ট ঘোষনা প্রদান করেছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যারই ধারাবাহিকতায় সর্বজনীন পেনশন স্কীম চালুর লক্ষ্যে মহান জাতীয় সংসদ কর্তৃক চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩’ পাশ করা হয়।
তিনি বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কীমে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী একজন সুবিধাভোগী ৬০ বছর পর্যন্ত ও ৫০ বছরের উর্ধেŸ বয়স্ক একজন সুবিধাভোগী ন্যুনতম ১০ বছর চাঁদা প্রদান সাপেক্ষে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন। সর্বজনীন পেনশনের আওতায় মোট ৪টি স্কিম রয়েছে। এগুলো হচ্ছে-প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা।
যুগ্ম সচিব মনির হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, আপাতত সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কমর্,কর্তা-কর্মচারীগণ সর্বজনীন পেনশনের আওতা বহির্ভূত হবেন। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় থাকা ব্যক্তিগণ তাদেও জন্য প্রযোজ্য স্কীমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, স্কিমে অংশগ্রহণ করার পূর্বে সংশ্লিষ্ট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর সুবিধা সমর্পণ করতে হবে।
তিনি এ সম্পর্কিত একটি বিস্তারিত প্রেজেন্টেশন উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করেন। প্রেজেন্টেশন উপস্থাপনের পর উপস্থিত সকলের কাছে প্রশ্ন গ্রহণ করে তাৎক্ষনিক তাঁর সম্ভাব্য উত্তর প্রদান করেন।
অবহিতকরণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, নিঃসন্দেহে এ ধরণের উদ্যোগ বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য আর্শীবাদ স্বরূপ। তাই তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এ স্কিমে সকলকে অংশগ্রহণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই মহান উদ্যোগকে সফল ও বাস্তবায়ন করার অনুরোধ জানান তিনি।
জেএন/এমআর