চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পে চাঁদাবাজি ও সরঞ্জামাদি চুরিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সব ধরনের কাজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ঠিকাদার সমিতি। এসব কাজে চবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে ঠিকাদার সমিতির সভাপতি মো. সেকান্দর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেদ চৌধুরী নিজেদের স্বাক্ষরিত চিঠি উপাচার্যকে দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, কিছু মাদকাসক্ত অছাত্রের চাঁদাবাজির বলি হচ্ছেন ঠিকাদারেরা। তারা রড, ইট, সিমেন্ট, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিসহ সব ধরনের নির্মাণসামগ্রী চুরি করছেন। তারা প্রকাশ্যে ঠিকাদার, নির্মাণশ্রমিক, প্রকৌশলীদের মারধর করছেন। সর্বশেষ ২৩ আগস্ট এসব অছাত্র পুলিশের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে এক ঠিকাদারকে গালাগাল করেছেন। তাকে রড দিয়ে মারধরের চেষ্টা করেছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, চাঁদাবাজির এসব অভিযোগ অতীতে প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো অভিযোগ করায় শ্রমিকদের মারধর করে বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী নিয়ে গেছেন চাঁদাবাজেরা। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও মালামাল লুট হচ্ছে। প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ঠিকাদারেরা মানহানিসহ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব ঘটনার বিহিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্ত ঠিকাদারেরা সব নির্মাণ-সংস্কারকাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ঠিকাদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেদ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে আমাদের। বারবার বলার পরও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এখন আমরা উপাচার্যকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছি এভাবে চলতে থাকলে আমাদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব হবে না। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখবো।
এর আগে গত ২৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী ও প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে চবি ছাত্রলীগের নেতা রাজু মুন্সির বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিরও অভিযোগ রয়েছে।
চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, এ ধরনের কাজে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে আমরা অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে এক্ষেত্রে প্রশাসনকে অনুরোধ করবো যেন জড়িতদের বের করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন বাধাগ্রস্তকারীকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।
চিঠির বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
জেএন/এমআর