নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে খোলা চিঠি দেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৬০ জন বিশিষ্ট নাগরিক। ওই চিঠির প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৫০টি পত্রিকার সম্পাদক।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৮শে আগস্ট কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সুশীল সমাজের অনেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া একটি খোলা চিঠিতে বাংলাদেশের শ্রম আইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এটি একটি সার্বভৌম দেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৪(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন। এ ধরনের চিঠি প্রদানের মাধ্যমে তারা অনৈতিক, বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন বলে আমরা মনে করি। এ ধরনের বিবৃতি বা খোলা চিঠি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বাংলাদেশের আইনে শ্রমিকদের প্রদত্ত অধিকার সংক্রান্ত বিধানাবলীর সম্পূর্ণ পরিপন্থি।
বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত এবং নোবেল বিজয়ীদের এ ধরনের বিবৃতি এবং চিঠি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনৈতিক। একজন অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না এবং বিচার করা যাবে না- এমন দাবি ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিপন্থি। আমরা মনে করি, তারা মামলা সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে এমন দাবি করেছেন। তাই আমরা তাদের অথবা তাদের প্রতিনিধি এসে মামলায় ড. ইউনূসকে আদৌ হয়রানি করা হচ্ছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
বিবৃতিতে ৫০টি পত্রিকার সম্পাদক বলেন, একই চিঠিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে যে ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে, তা স্বাধীন-সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।
মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের জনগণ যে কোনো মহলের এ ধরনের অবমাননাকর, অযাচিত ও বেআইনি হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেবে না। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়ে সম্মান প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিদাতারা হলেন- ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান, ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, সমকালের সম্পাদক আলমগীর হোসেন, যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, ইউএনবি সম্পাদক ফরিদ হোসেন, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ইমেরিটাস এডিটর নাঈমুল ইসলাম খান, সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির, পিপল্স টাইম সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, ডেইলি সান সম্পাদক রেজাউল করিম লোটাস, বাংলাদেশ জার্নাল সম্পাদক শাহজাহান সরদার, আমাদের নতুন সময় সম্পাদক নাসিমা খান মন্টি, বাংলাদেশ বুলেটিন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, আজকালের খবর সম্পাদক ফারুক আহমেদ তালুকদার, কালবেলা সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, বাংলাদেশ পোস্ট সম্পাদক শরীফ শাহাবুদ্দিন, জনকণ্ঠ সম্পাদক শামীমা এ খান, সময়ের আলো ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কমলেশ রায়, প্রতিদিনের বাংলাদেশ সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, দেশ রূপান্তর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন, ভোরের ডাক সম্পাদক বেলায়েত হোসেন, দৈনিক বাংলা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত, আলোকিত বাংলাদেশ ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শামীম সিদ্দিকী।
এ ছাড়া সংবাদ সারাবেলা সম্পাদক আব্দুল মজিদ, সংবাদ প্রতিদিন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রিমন মাহফুজ, বাংলাদেশের আলো সম্পাদক মফিজুর রহমান খান বাবু, ঢাকা টাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন, সকালের সময় সম্পাদক নূর হাকিম, আমার বার্তা সম্পাদক মো. জসিম, স্বাধীন বাংলা সম্পাদক আখলাকুল আম্বিয়া, আজকের দর্পণ সম্পাদক এসএম নূরে আলম সিদ্দিকী, লাখো কণ্ঠ সম্পাদক ফরিদ বাঙ্গালী, বাংলাদেশ সমাচার সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান, প্রথম কথা সম্পাদক কিশোর আদিত্য, দ্যা সাউথ এশিয়ান টাইমস সম্পাদক দীপক আচার্য্য, আজকের সংবাদ সম্পাদক আবু সাঈদ, দর্পণ প্রতিদিন সম্পাদক আতিকুর রহমান চৌধুরী, আলোর বার্তা সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ডেইলি ইভিনিং নিউজ সম্পাদক মো. সেলিম, অগ্রসর সম্পাদক মোস্তফা হোসেন চৌধুরী, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নাজমুল হক সরকার, গণমুক্তি সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শাহীন, প্রতিদিনের সংবাদ সম্পাদক মো. সাইদুল ইসলাম, ডেইলি সিটিজেন টাইমস সম্পাদক নাজমুল আলম তৌফিক, কান্ট্রি টুডে সম্পাদক হেমায়েত হোসেন ও মুখপাত্র সম্পাদক শেখ জামাল।
জেএন/এমআর