পাকিস্তানকে যদি গতি তারকদের আঁতুড়ঘর বলা হয়ে থাকে তাহলে সেটি কোনো ভাবেই ভুল কিছু বলা হবে না।পৃথিবীতে পাকিস্তানীদের ক্রিকেট যে কয়েকটি কারণে সমৃদ্ধ তার মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ পাকিস্তানের পেস ইউনিট।
পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ী গতি তারকা ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস থেকে শুরু যুগে যুগে পাকিস্তানে জন্ম নিয়েছে একের পর এক গতিতারকা। এরপর শোয়েব আকতারের বোলিং আগ্রাসনের কথা সবারই আছে জানা। এরপর বছরের বছর মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ আসিফ, ওমর গুল, সোহেল তানভীর, জুনাইদ খান, ওয়াহাব রিয়াজসহ গতিতারকা চষে বেড়িয়েছেন বিশ্ব ক্রিকেট। তারপর সে তালিকায় যুক্ত হন বিশ্বক্রিকেটের সবচেয়ে লম্বা পাকিস্তানী পেসার মোহাম্মদ ইরফান, আরেক পেসার আনোয়ার আলীসহ আরো অনেক গতি তারকা।
যত দিন পেরিয়েছে ততই সমৃদ্ধ হয়েছে পাকিস্তানের পেস বোলিং ইউনিট। শেষ তিন বছরে পাকিস্তান বোলিং লাইন আপে যুক্ত হয়েছে হ্যারিস রউফ, শাহীন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহের মতো তারকাদের নাম।
২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের ঘন্টায় ১৬১.৩ কিলোমিটার বলে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী গতিতম বোলার হিসেবে খেতাব পেয়ে যান পাকিস্তানী শোয়বে আখতার। এরপর পাকিস্তানের হয়ে বর্তমান সময়ে বেশী দ্রুত গতির বোল করে থাকেন হ্যারিস রউফ।
ইংল্যান্ডে বিপক্ষে টিু-টুয়েন্টি ম্যাচে দ্বিতীয় পাকিস্তানী বোলার হিসেবে হিসেবে ঘন্টায় ১৫৯ কিলোমিটার স্পিডে বল করেছিলেন এই বোলার। তবে আইসিসি বলছে গড়ে প্রতি ঘন্টায় ১৪২ কিলোমিটার স্পিডে বল করে থাকেন পাকিস্তানী হ্যারিস রউফ।
সবশেষ ২০২৩ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলেছিলেন পাকিস্তানী এই বোলার। বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বে রংপুর রাইডার্সের হয়ে জহুর আহমেদ চৌধুরীর স্টেডিয়ামের প্রেস কনফারেন্সে এসেছিলেন হ্যারিস রউফ। নিজের বোলিং স্পিডের উৎস কোথায় জানতে জানতে চাওয়া হলে হ্যারিস রউফ বলেছিলেন, এটা মূলত আসে প্রাকৃতিক ভাবে এবং জেনেটিক্যালি।
হ্যারিস রউফের এক কথায় সেদিন স্পষ্ট হওয়া গিয়েছিলো পাকিস্তান ক্রিকেটে গতি তারকাদের উৎপত্তির উৎস। পাকিস্তান ক্রিকেটের উর্বর ভূমি গতি তারকদের জন্মদেয় সেটি প্রমাণ হয়েছিলো হ্যারিস রউফের সে কথায়।
তবে হ্যারিস রউফদের সে গতিকে গতি তারকায় রুপান্তরের পেছনে রয়েছে আরো একটি বড় কারণ। সে কারণটি পাকিস্থানের এই ঝাঁক পেসার কিংবদন্তি যারা দাপিয়ে বেড়িয়েছেন বিশ্ব ক্রিকেট মঞ্চ। মূলত এই কিংবদন্তি সাবেক পেসারদের থেকে অনুপ্রাণিত হন উঠতি ক্রিকেটাররা। যাদের শৈশব আর কৈশোর জুড়ে ছিলো একজন ওয়াসিম আকরাম আর শোয়েব আখতার হয়ে উঠার স্বপ্ন।
এছাড়া পাকিস্থান ক্রিকেট বোর্ড বয়সভিত্তিক দল গুলোতে দিয়েছে বিশেষ নজর যাতে করে প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা যাতে হারিয়ে না যায়। ফলে হ্যারিস রউফদের মতো তারকরা নিজেদের মেলে ধরতে পারেন খু্ব সহজে।
ভারতীয় উপমহাদেশে পাকিস্তানের মাটিতে পেস বোলারদের নিতে হয় বাড়তি চ্যালেঞ্জ কেননা এখানকার পিচে পেস বোলিং করা অন্য দেশের চাইতে একটু কঠিন। আর এই চ্যালেঞ্জ নিতে নিতে হ্যারিস রউফরা হয়ে উঠেন গতিদানব।
জেএন/এমআর