প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার মানসম্মত পুনর্বাসন চিকিৎসা পেশাজীবী তৈরিতে সমান গুরুত্ব দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার মেরুরজ্জুর আঘাত, পক্ষাঘাত, নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজেবিলিটিসহ সকল প্রতিবন্ধী নারী পুরুষ ও শিশুদের সমাজের মূল স্রোতধারার অন্তর্ভুক্ত করতে চিকিৎসা পুনর্বাসন সেবা এবং জীবনমুখী শিক্ষা প্রদানে নিরলস কাজ করে আসছে। পাশাপাশি মানসম্মত পুনর্বাসন চিকিৎসা পেশাজীবী তৈরিতেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল ‘বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস’ উপলক্ষ্যে এক বাণীতে আরো বলেন, বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস উপলক্ষ্যে একটি ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হতে যাচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ফিজিওথেরাপি পেশার সাথে সম্পৃক্ত পেশাজীবী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক, রোগী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
তিনি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যিনি স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ফিজিওথেরাপি শিক্ষা, চিকিৎসা ও পুনর্বাসন খাতে উন্নয়নের সূচনা করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ফিজিওথেরাপি ও অন্যান্য পুনর্বাসন পেশাজীবীগণের উপযুক্ত সম্মান, কর্মপরিবেশ, পেশাগত স্বাতন্ত্র্য, স্বাধীনতা এবং পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এরই মধ্যে ২০১৮ সালে ‘বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন’ মহান জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছে। বাংলাদেশে ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি এসোসিয়েশন (বিপিএ) এর উদ্যোগে বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস উদ্যাপিত হয়ে আসছে। ২০০৭ সাল থেকে বিপিএ ‘ওয়ার্ল্ড ফিজিওথেরাপিতে’ বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে এবং বর্তমানে রিহ্যাবিলিটেশন খাতে আমাদের উল্লে-খযোগ্য অর্জনগুলোকে বিশ্বব্যাপী প্রচার করে আসছে।’
বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘বাত-ব্যথা ও অস্থিসন্ধির প্রদাহে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বে প্রতি ৩ জন সিনিয়র নাগরিকের একজনের বাত-ব্যথা রয়েছে, তাঁদের চিকিৎসায় একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি টিমের সদস্য হিসেবে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের ভূমিকা অপরিসীম। বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রণীত ‘রিহ্যাবিলিটেশন ২০৩০’ কে সামনে রেখে স্বাস্থ্য ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবার সকল পর্যায়ে স্নাতক ফিজিওথেরাপিস্টগণের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
এছাড়াও বাত-ব্যথা, হাড়, ফোড়া ও মাংসপেশীর ব্যথা, কোমর ব্যথা, প্যারালাইসিস, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কিংবা মুভমেন্টজনিত সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞানভিত্তিক ফিজিওথেরাপি এই ধরনের রোগসমূহের চিকিৎসা, পুর্নবাসন এবং প্রতিরোধের অন্যতম শর্ত। তাছাড়া, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথার চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি একটি স্বীকৃত, কার্যকরী ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াবিহীন চিকিৎসা পদ্ধতি। এ চিকিৎসা গ্রহন করার মাধ্যমে ভালো থাকা সম্ভব ও ব্যথা নিরাময়ে অধিক কার্যকরী।
দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী সকল ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা পেশাজীবী ও সেবাগ্রহীতাদেরকে অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি এসোসিয়েশন (বিপিএ) ও ফিজিওথেরাপি বিভাগ, সিআরপি আয়োজিত দেশবাসী সকল কর্মসূচির সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করেন।
জেএন/এমআর