রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁর পাঁচ দিনের ইন্দোনেশিয়া সফর শেষে আজ শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুর পৌঁছেছেন।
তিনি ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় তিন দিনব্যাপী ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট (আসিয়ান) এর ৪৩ তম শীর্ষ সম্মেলন এবং ১৮তম ‘ইস্ট এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দেন।
রাষ্ট্রপতি ও তাঁর স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি-১৯১১) সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিকাল ২টা ১২ মিনিটে (সিঙ্গাপুর সময়) পৌঁছান।
সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তৌহিদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান। সিঙ্গাপুরে রাষ্ট্র প্রধান ও তাঁর স্ত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে।
এর আগে সকাল ১১টায় (জাকার্তা সমযয়) ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী সুকর্নো-হাত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়েন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।
বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতিকে ইন্দোনেশিয়ার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী আরিফিন তাসরিফ এবং ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশ মিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিদায় জানান।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ৪ সেপ্টেম্বর জাকার্তায় পৌঁছান। তিনি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সভাপতিত্বে ৫-৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী ৪৩তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানাসহ ৫ সেপ্টেম্বর সকালে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার বিষয়ক বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনও সেখানে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন।
৪৩তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুধু আসিয়ান ১০টি দেশের সাংগঠনিক নেতারাই উপস্থিত ছিলেন না, বিশ্বের কয়েকজন রাষ্ট্রীয় নেতা, রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, অংশীদার দেশগুলোর প্রতিনিধিরা ও এতে অংশ নিয়েছেন।
আসিয়ান মহাসচিব জানান, আয়োজক দেশ ইন্দোনেশিয়া জাকার্তা আসিয়ান সম্মেলনের জন্য ২৭টি বিশ্ব নেতা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
রাষ্ট্রপতি ৬ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো এবং ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন এর সেক্রেটারি-জেনারেল ড. সালমান আল ফারিসির সঙ্গে পৃথক দুটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেন।
শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ৭ সেপ্টেম্বর ১৮তম ‘পূর্ব এশিয়া’ শীর্ষ সম্মেলনে (ইএএস) যোগদান করেন এবং আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে তিনি বক্তব্য প্রদান করেন।
ভাষণ দানকালে তিনি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কটের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে আসিয়ানের বিভিন্ন বিষয় উত্থাপন করেছেন।
সাত বছর আগে বাংলাদেশের ভূখন্ডে আশ্রয় নেওয়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১২ লক্ষাধিক মিয়ানমার নাগরিকদের প্রত্যাবাসনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ এখন বড় সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে অনুষ্ঠানের ফাঁকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কয়েকজন বিশ্বনেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
তারা হলেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন এবং লাও পিপলস ডেমোক্রেটিক রিপাবলিকের প্রধানমন্ত্রী সোনেক্সে সিফানডোন।
স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরার কথা রয়েছে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের।
জেএন/পিআর